চকরিয়ায় জুয়া খেলার টাকা না দেয়ায় বেধড়ক মার, অন্তস্বত্তা মহিলাসহ গুরুতর আহত ৫
চকরিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় স্বামীকে জুয়া খেলায় বাধা দেয়ায়কে কেন্দ্র করে ছয় মাসের অন্তস্বত্তা মহিলাসহ একই পরিবারের তিনজনকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে।
এনিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা চলছে।
আহত ব্যাক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত ব্যাক্তিরা হলেন উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের কাসিম আলী সিকদার পাড়া এলাকার মৃত মো. কালুর পুত্র বদর মিয়া (৬৫), তার অন্তস্বত্তা বিবাহিত কন্যা পারুল আক্তার (২৩) ও ছেলে মো. রাসেল (২১)।
১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের কাসিম আলী সিকদার পাড়া এলাকায় বদর মিয়ার কন্যা পারুল আক্তারের সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ হয় একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুত্র মো. কালুর। কালুর সাথে স্ত্রী পারুলের প্রায় সময় জুয়া খেলার বিষয় নিয়ে বাড়িতে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি হতো।
দুই দিন ধরে কালুর অন্তস্বত্তা স্ত্রীকে জুয়ার টাকার জন্য বেধড়ক মারধর করে তার বাপের বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। এরই সুত্র ধরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে পারুলের স্বামী কালু ও তার চাচা শ্বশুড় আনোয়ার হোসেন এবং চাচাতো দেবরের সাথে অন্তস্বত্তা পারুলকে মারধরের ঘটনার বিষয় নিয়ে দু’পক্ষ তর্কে জড়িয়ে এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তস্বত্তা পারুলসহ তার বয়োবৃদ্ধা পিতা ও ভাইকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন।
এ সংঘর্ষের ঘটনা থামাতে গিয়ে স্থানীয় মনজুর আলম (৩৫) নামের এক ব্যাক্তিও গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহত অন্তস্বত্তা পারুল আক্তার পার্বত্যনিউজকে বলেন, বিবাহের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ ভাল ভাবে সংসার চলে আসছিল। কিছু দিন যেতে না যেতেই বুঝতে পারলাম স্বামী একজন পেশাদার জুয়াড়ি। নিত্যদিন জুয়া খেলে ও নেশা জাতীয় দ্রবাদি পান করে গভীর রাত্রে বাড়ি ফিরে আমাকে নানা ভাবে নির্যাতন চালায়। গত শনিবার রাত্রে জুয়া খেলার জন্য টাকা না দেয়ায় আমার স্বামী আমাকে ব্যাপক মারধর করে বাপের বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে আমার বাপের বাড়ির লোজনের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা সৃষ্টি হলে উক্ত ঘটনায় আমার বৃদ্ধ পিতা বদরমিয়া ও ভাই রুবেলকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা উল্টো আমার বৃদ্ধ পিতা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষথেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে আহতের পারিবারিক সুত্রে জানাগেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এলাকায় এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে তা কেউ আমাকে বলেনি। তবে আমি খোজ নিয়ে দেখব কি ঘটনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মো. বখতিয়ার উদ্দিন চোধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরণের ঘটনার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।