চকরিয়ায় ১৯ বছর পর উচ্ছেদ হুমকিতে ১১ পরিবার

চকরিয়া প্রতিনিধি:

চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে জায়গার মালিকপক্ষ আদালতের চিরস্থায়ী আদেশ জারি থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে এসব জায়গা জবরদখলের জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আদালতের আদেশের প্রায় ১৯ বছর পর চক্রটি অন্তত ১০টি ভুঁয়া দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে উল্লেখিত জায়গা দখলে নিতে মালিকপক্ষের ১১টি দিনমুজুর পরিবারকে উচ্ছেদে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি এসব পরিবারের নারী-পুরুষ সদস্যদেরকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করে আসছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঢেমুশিয়া মৌজার আরএস ৯১ নং খতিয়ান ও পরবর্তীতে বিএস ৪১৬ নং খতিয়ানের চারটি দাগের অধীনে পাঁচ একর ২৪ শতক লবণ ও ধানী জমির বৈধ মালিক ইউনিয়নের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়া গ্রামের মৃত ঠান্ডা মিয়ার ছেলে সাহাব উদ্দিন গং। ঠান্ডা মিয়া মারা যাওয়ার পর থেকে তাঁর ছেলে-মেয়েরা উল্লেখিত জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে রয়েছেন।

জায়গার মালিক সাহাব উদ্দিন জানান, তাঁর বাবা ঠান্ডা মিয়া মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর স্থানীয় প্রভাবশালী আবু তাহের কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে অন্তত ১০টি ভুঁয়া দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে উল্লেখিত জায়গা দখলে নিতে চক্রান্ত শুরু করে। আমরা তাঁর দখল চেষ্ঠার বিরুদ্ধে বাঁধা দিলে আবু তাহের গং ১৯৯৪ সালে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা জজ ও ২০০৩ সালে সহকারী জজ আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী সাহাব উদ্দিন বলেন, মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে ২০০০ সালের ১১ নভেম্বর কক্সবাজারস্থ উখিয়া সহকারী জেলা জজ আদালতের বিচারক আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর অপর মামলার (২৩৪/৯৪) রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বাদি আবু তাহের গংয়ের সকল দলিল পর্যালোচনা শেষে উল্লেখিত জায়গার মালিকানা বিবাদি সাহাব উদ্দিন গংয়ের বলে আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত উল্লেখিত জায়গায় মালিকপক্ষে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ জারি করেন।

অপরদিকে আগের মামলার আদেশের বিরুদ্ধে আবু তাহের সংক্ষুদ্ধ হয়ে ২০০৩ সালে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে একটি আপীল মামলা (নং ১৭/০৩) দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মো. মোতাজিদুর রহমান ২০০৩ সালের ৫ জুলাই সর্বশেষ শুনানী শেষে ওই দিন আপীল মামলাটি খারিজ করে দেন। আদেশে আদালত আবু তাহের কতৃক আদালতের উপস্থাপন করা ১০টি রেজিস্ট্রাট কবলা জাল হিসেবে চিহিৃত করেন।

জায়গার মালিক সাহাব উদ্দিন অভিযোগ তুলেছেন, দখল চেষ্ঠায় অভিযুক্ত প্রভাবশালী আবু তাহের গংয়ের একটি মামলায় আদালত ১৯ বছর আগে আমাদের পক্ষে চিরস্থায়ী আদেশ ও অপর আপীল মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও আবু তাহের গং আমাদের উল্লেখিত জায়গা জবরদখলে নিতে এখনো কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে নানাভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের ১১টি পরিবারকে জায়গা থেকে উচ্ছেদে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। মামলায় জড়িয়ে হয়রানির চেষ্ঠা করছে। এ অবস্থায় আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ১১ পরিবার উচ্ছেদের পায়তারা, চকরিয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন