জাতীয় নিরাপত্তায় অস্ত্রের শক্তিই নয়, প্রবৃদ্ধিও দরকার: ইমরান

fec-image

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এতদিনে বুঝতে পারলেন শুধু সামরিক শক্তিতে বলীয়ান হলেই কোনো দেশের জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত হয় না।  তার মতে, জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে উন্নয়ন, সর্বাঙ্গীণ প্রবৃদ্ধি এবং আইনের শাসনও দরকার।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘মার্গাল্লা সংলাপ ২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ইমরান খান। সেখানেই এসব কথা বলেছেন তিনি।

ইমরান বলেন, এতদিন পাকিস্তান সরকারের পুরো ধ্যানখেয়াল ছিল সামরিক শক্তির ওপর। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা একটি সর্বাঙ্গীণ বিষয়। কারণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি না হলে কখনোই জাতীয় নিরাপত্তা থাকবে না এবং এটি ছাড়া কোনো দেশকেই নিরাপদ বলা যায় না।

তিনি আরও বলেন, জনসংখ্যার ছোট একটি অংশ যদি ক্রমাগত ধনী হয় এবং বাকিরা পেছনে পড়ে থাকে, তাহলে কোনো দেশ নিরাপদ হতে পারে না। একই কথা প্রযোজ্য একটি নির্দিষ্ট এলাকা বা দুই-তিনটি শহর উন্নয়নশীল, আর দেশের অন্য অংশ পিছিয়ে থাকার ক্ষেত্রেও।

পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসম উন্নয়ন ও অবিচারের বিরুদ্ধে মানুষের রুখে দাঁড়ানো সবসময়ই সহিংসতার কারণ হয় এবং এটি জাতীয় নিরাপত্তার অন্যতম প্রধান সমস্যা। আমাদের ন্যায়সঙ্গত এবং সর্বাত্মক উন্নয়নের পথে যেতে হবে। একইভাবে, মানব উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের সেদিকেও মনোযোগ দিতে হবে।

তার মতে, উন্নয়নশীল বিশ্ব পিছিয়ে পড়ছে মূলত আইনের শাসন এবং দুর্নীতির কারণে। সেখানে গবেষণারও অভাব রয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে মৌলিক চিন্তাভাবনা বেরিয়ে আসে। এটি ছাড়া মৌলিক চিন্তাভাবনা বিকশিত হয় না এবং এই চিন্তাপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সাহায্য করে বিতর্ক।

এদিন আফগান ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসনকেও একহাত নিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তার দাবি, আফগানিস্তানে ভুল করেছে যুক্তরাষ্ট্র, আর তার খেসারত দিচ্ছে হচ্ছে পাকিস্তানকে।

ইমরান খানের অভিযোগ, আফগানিস্তান যুদ্ধে মার্কিনিদের সমর্থন করায় যে দেশটি (পাকিস্তান) সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তাদের ওপরই ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র। অথচ পাকিস্তান ছাড়া মার্কিনিদের অন্য কোনো মিত্রের ৮০ হাজার মানুষ হতাহত হয়নি, ৩০-৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়নি এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়নি। তবুও গত ১০-১৫ বছর ধরে পশ্চিমা মিডিয়াগুলো পাকিস্তানের ‘আত্মত্যাগকে’ কৃতিত্ব দেয়নি, বরং অপমান করা হয়েছে যে, তারা ‘ডাবল গেম’ খেলছে। এটি সম্পূর্ণ ভুল। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতার জন্য পাকিস্তানকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।

সূত্র: জাগোনিউজ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন