জেএসএস, ইউপিডিএফ’কে নিষিদ্ধ করে সকল সন্ত্রাসীদের দমন করতে হবে

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:

পাহাড়ে সকল সশস্ত্র কর্মকাণ্ডের ও অশান্তির মূল হোতা জেএসএস ইউপিডিএফ, জেএসএস ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজীর কারণে আস্থা ও বিশ্বাসের সংকট পাহাড়ে দিন দিন বাড়ছে। তাই জেএসএস ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করে সকল সন্ত্রাসীদের দমন করতে হবে পাহাড়ে শান্তি আনতে হলে।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে শহরের কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য অধিকার ফোরাম ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় ৮ জনকে হত্যা ও অসংখ্য মানুষকে আহত করার প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তারা এইসব কথা বলেন।

বক্তরা বলেন, গত ১৮ তারিখে রাঙ্গামাটির জেলার বাঘাইছড়িতে ৮জন কে হত্যা এবং ২০জনকে আহত  করার  পরদিন বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তংচংগ্যাকে গুলি করে হত্যা করে পাহাড়ে সন্ত্রাসের নির্মমতার আরেকটি ইতিহাস তৈরি করেছে জেএসএস ও ইউপিডিএফ।

বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আজ বাঙালি উপজাতি কারোই নিরাপত্তা নেই, সন্ত্রাসীদের কাছে সকলেই অসহায় সবাই জিম্মি। আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন জেএসএস ইউপিডিফের কারণে পাহাড়ে নিরাপত্তা সংকট দিন দিন আরো প্রকট হচ্ছে।

বর্তমানে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বাসন্তি চাকমা  গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি এবং সেনাবাহিনী সম্পর্কে যে মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক এবং উগ্রসাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিয়েছে তা রাষ্ট্রদ্রোহী’র সামিল, অসাংবিধানিক। তার বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বাসন্তী চাকমার উগ্রসাম্প্রদায়িক বক্তব্যে পাহাড়ে উপজাতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে উস্কে দিয়েছে। তার দ্বায়ে সংসদ থেকে তাকে অপসারণ করা হোক।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়িতে ৮ জনের হত্যাকারী ও অসংখ্য মানুষকে আহত করায় জেএসএস ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে চূড়ান্ত শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে পর্যাপ্ত পরিমানে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান নেতৃবৃন্দগণ।

এসময় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা, পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সাড়াশি অভিযান শুরু করা, পত্যাহার কৃত সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন করার জোর দাবি জানানো হয়।

এসময় বক্তারা পার্বত্যাঞ্চলে যারা এইসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের অবিলম্বে আইনের আওয়তায় এনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো হোক এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে, চাঁদাবাজি, খুন, গুমসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানায়।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য অধিকার ফোরামের উপদেষ্টা ও লংগদু উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবিএস মামুন, পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. পারভেজ আহম্মেদ, যুগ্ন সম্পাদক মো. রবিউল, খাগড়াছড়ি জেলা শাখা যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবছার, কলেজ শাখার সভাপতি মোঃ মুমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাকি বিল্লাহ্, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল আলম সহ প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে সংগঠনের কার্যক্রম ব্যাপক গতিশীল করার লক্ষ্যে পার্বত্য অধিকার ফোরামের ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা ও কলেজ শাখার কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জাহিদুর রহমান।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো. নাজিম আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. আবছার উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইসমাঈলকে দিয়ে ১১সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখা কমিটিতে মো. মুমিনুল ইসলামকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাকি বিল্লাহ্, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল আলম সহ নিয়মিত ছাত্রদেরকে দিয়ে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার কমিটি ঘোষণা করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন