টানা বৃষ্টিতে কাউখালীর কৃষি, মৎস্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি

Kawkhali Rangamati News- 1 copy

আরিফুল হক মাহবুব:
টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটির কাউখালীর কৃষি, মৎস্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ে জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম আদা হলুদ সবজি চাষে ধ্বস নেমেছে। পঁচে গেছে শতাধীক হেক্টর জমির আদা, হলুদ ও গ্রীষ্মকালীন শাক-সব্জির ক্ষেত। ফলে বাজারে সব্জিবর দাম স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া সপ্তাহব্যাপী চলা বৃষ্টির কারণে উপজেলার বেতবুনিয়া, কলমপতি, ঘাড়ার অন্তত ৪২ পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। কমবেশী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পাঁচশতাধিক পরিবার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে উপজেলা বেতবুনিয়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট ও অনেক মৎস্য প্রজেক্ট পাহাড়ী ঢলে বিলীন হয়ে গেছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার চার ইউনিয়নে কৃষকরা প্রায় ১১৮৯ হেক্টর পাহাড় ও জমিতে মৌসুমী শাক-সব্জি, আদা, হলুদ ও জুম চাষ করেছেন। এর মধ্যে ৯৫ হেক্টর জমির আউশ জুম কম বেশী ক্ষতি হয়েছে। ২২৯ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন শাক সবজি বেশীরভাই নষ্ট হয়ে গেছে।

এছাড়া প্রায় ৪৫০ হেক্টর পাহাড়ের ঢালুতে লাগানো আদা ও ৪১৫ হেক্টর হলুদ চাষ করেছে কৃষকরা। এরমধ্যে শতাধিক হেক্টর জমির আদা হলুদ নষ্ট হয়েগেছে। এতে অনেক কৃষক সর্বশান্ত হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।

কাউখালী কৃষি অফিসের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল মোস্তফা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে অনেক দূর্গম অঞ্চল রয়েছে যেখানে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। সেসব অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা গেলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।

এদিকে বৃষ্টি পরবর্তী মৌসুমী তরীতরকারীর দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত বাজারে আলু ব্যাতিত সবধরণের মৌসুমী সবজি পঞ্চাশ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে বাজারে ঢুকে। তাছাড়া আগামী কয়েকদিনে এসব এলাকায় সবজির দাম আরো বৃদ্ধি হওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সবজি বিক্রেতারা।

চলমান বৃষ্টিতে উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা তচনছ হয়ে গেছে। পাহাড় ধ্বস ও পাহাড়ী ঢলের কারণে এখানকার প্রায়ই রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে। ছোট ছোট অনেক কালভার্ট ভেঙ্গে গেছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে দৈনিক শত শত যানবাহন চলাচল করছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ননী সাহা জানান, উপজেলার কলমপতি, ঘাগড়া, ফটিকছড়ি ও বেতবুনিয়া ইউনিয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক্ষ ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকায় এখনো পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। তিতি জানান, এসব রাস্তাঘাট দ্রুত মেরামতের বিষয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও অবকাঠামোর তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে।

মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, অব্যাহত বৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৮টি বড় মৎস্য প্রজেক্ট বিলীন হয়েছে গেছে। এতে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি চাকমা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন