টেকনাফে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে জেলে নিহত
টেকনাফে নাফনদীতে ঠেলা জাল টানতে গিয়েই মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী নেভী জওয়ানদের গুলিতে এক জেলে নিহত হয়েছে। অপর এক জেলে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ভোররাতে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের খারাংখালী বিওপির একদল বিজিবি জওয়ান টহলকালে ৫নং স্লুইচ গেইট সংলগ্ন পরিত্যক্ত এলাকায় দুই ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন মৃত এবং অপরজন কাতরাচ্ছে। আহত ব্যক্তির কাছে জিজ্ঞাসাবাদে নিহত ব্যক্তি হোয়াইক্যং পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়ার জেলে মৃত ছিদ্দিক আহমদের পুত্র নুর মোহাম্মদ (৩৪) এবং আহত ব্যক্তি একই গ্রামের বক্তার আহমদের পুত্র আবুল কালাম (৩২) নিশ্চিত হয়।
এরপর বিজিবি সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সকালে কক্সবাজার রেফার করা হয়। অপরদিকে গুলিতে নিহত জেলের মৃতদেহ উদ্ধারে পুলিশ না আসা পর্যন্ত বিজিবি টহল দলের পাহারায় রয়েছে। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার হলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে স্থানীয়রা জানায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই জেলে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নাফ নদীতে মাছ শিকারে যায়। তারা নাফ নদীতে মাছ শিকাররত অবস্থায় মিয়ানমারের ওপার থেকে বিজিপি এলোপাতারি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। তাদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নুর মোহাম্মদ ঘটনাস্থলে মারা যান। অপর জেলে আবুল কালামকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঝিমংখালী বিজিবির সদস্যরা উদ্ধার করে টেকনাফ স্বাস্থ্য কম্পেক্সে নিয়ে যান। আবুল কালামের পরিবার জানান, তার পেটে গুলি রয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আবুল কালাম।
এ দিকে বিজিবি জানায়, নাফ নদীতে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিজিবির চোক ফাঁকি দিয়ে মাছ শিকারে যান জেলেরা।
উক্ত বিষয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার জাহেদ হোছাইন বলেন, গুলিতে নিহত এবং আহত ব্যক্তিরা অসহায়-গরীব এবং প্রকৃত জেলে। অভাবের তাড়নায় নাফনদীতে ঠেলা জাল টানতে গিয়েই নাফনদীতে টহলরত মিয়ানমার নেভী সদস্যদের গুলিতে নিহত এবং আহতের ঘটনা ঘটে।
এই ব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ ফয়সল হাসান খান (পিএসসি) এর নিকট জানতে চাইলে তিনি প্রাথমিকভাবে গুলিতে এক জেলে নিহত এবং অপর এক জেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন থাকার সত্যতা স্বীকার করলেও প্রকৃত ঘটনা পর্যবেক্ষণের পর পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান।
এদিকে নিহত নুর মোহাম্মদের সংসারের স্ত্রী, ৪ জন মেয়ে, ১ জন ছেলে এবং গুলিতে আহত জেলের পরিবারে স্ত্রী, ৩ সন্তানসহ আত্বীয়-স্বজন রয়েছে।