ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, সামনে আরও ভয়ানক রূপ নিতে পারে

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প অতি ঘনবসতি হওয়ায় মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলো হয়ে উঠেছে ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’।

চলিত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯০৫ জন । এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। রোহিঙ্গা শিবিরের আশপাশের স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১১৮ জন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ছর কক্সবাজারে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৭ হাজার ৩৯০ জন। তাদের মধ্যে ১৫ হাজার ৩৫২ জনই ছিল রোহিঙ্গা। আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল ৩০ রোহিঙ্গাসহ ৩৯ জন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, এ বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে উখিয়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে। এখানকার ক্যাম্প-৩ এলাকায় ৬২০ জন, ক্যাম্প-১৭-এ ১৭১ জন, ক্যাম্প-৪-এ ১৬৭ জন, ক্যাম্প-১ ডব্লিউতে ১১৫ এবং ক্যাম্প-২৪-এ ৯১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভায় ২৫ জন, টেকনাফে ২১ জন, সদর উপজেলায় ১৯ জন, মহেশখালীতে ১২ জন এবং রামু উপজেলায় ৮ জন রয়েছে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, ১৬ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১৫০ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছে ২৭ জন। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ জন ভর্তি হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন বিপাশ খীসা জানান, ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও কক্সবাজার পৌরসভা সচেতনতামূলক নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে সার্বক্ষণিক ৯ জন চিকিৎসক টেলিসেবা দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু সচেতনতায় ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ৩ লাখ ৫০ হাজার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ৫০ হাজার মশারি বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া গত জুন ও চলতি মাসে আরও ৯৮ হাজার মশারি বিতরণ কার্যক্রম চলমান।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি মশার প্রজননের স্থান ধ্বংস করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গার নালা-নর্দমা পরিষ্কার ও ওষুধ ছিটানো কার্যক্রম হাতে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় এবং দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আরআরআরসি কার্যালয়ের চিকিৎসা সমন্বয়ক ডা. আবু তোহা ভূঁইয়া।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি ও মশার উৎসস্থল ধ্বংসের জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থেকে যে গাড়িগুলো বাহির হয়, সে গাড়ি গুলোর ভিতরে স্প্রে করে বের করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন