দূর্গা বিসর্জন : সাঙ্গু নদীতে উৎসবে মাতোয়ারা হাজারো মানুষ

DSC_0059

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এটি তো কেবলই বিসর্জন নয়, এটি একটি উৎসব। উৎসব প্রিয় বাঙ্গালি হিন্দুর আরেকটি প্রাণের উৎসব। সাঙ্গু দেবী দূর্গা’র বিসর্জন দিতে আসা তরুণ-তরুণীরা এভাবেই যেন সব কিছুকে বুঝিয়ে দিলেন। নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ দেখে না বলে উপায় নেই এটি একটি উৎসব।

প্রতি বছরের মতোই সাঙ্গু নদীতে দূর্গা বিসর্জন হয়ে উঠেছিল এক প্রাণের উৎসব। ধর্মের আচার অনুষ্ঠানগুলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হলেও উৎসবে মেতে উঠেছেন সবাই। শনিবার সদর উপজেলার ১৫টি ছোট-বড় ও ঘরোয়া মন্ডপের দুর্গোগুলোকে মালবাহী গাড়ীতে করে শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ দুপুরে পুরাতন বালাঘাটার নদীর ঘাটে প্রতিমাকে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। শহরের রাজার মাঠে কেন্দ্রীয় দূর্গোৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে  দূর্গাকে একই এলাকায় বির্সজন দেওয়া হয়েছে।

বিসর্জন অনুষ্ঠানে যে দিকে চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গোৎসবের দূর্গা বিসর্জনের এই দিনে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সাঙ্গু নদীর তীরে ভীড় করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। ঢোল তবলা, রং মেখে সেজে, হাসি আর কান্নায় দূর্গাকে বিদায় দিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বী বলে পরিচিত হিন্দুরা। জাতিতে জাতিতে মিলেমিশে একাকার ছিল সাঙ্গু নদীর তীর।

বিসর্জন অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলাম,পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্য, জেলা আ’মীলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী মজিবর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবিন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা সার্বজনীন দূর্গোমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক লক্ষী পদ দাশ সাংবাদিকদের জানান, এবার জেলায় সরকারী ভাবে ২৭টি এবং ঘরোয়া ও ছোট আকারে ২৫ টি সব মিলিয়ে ৫২টি মন্ডপে পুজা হয়েছে। তার মধ্যে অন্তত সদরের ১০টি মন্ডপের ২৪টির মত প্রতিমা সাঙ্গু নদীতে ১৮ টির মত মাতামুহুরী নদীতে বাদবাকী গুলো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিসর্জন দেয়া হয়েছে।

দূর্গা বিসর্জন দিতে এসেছিলেন বৃদ্ধা হরি দাশ। তাঁর কাছে বিসর্জনটা বেদনার। তিনি বলেন, দূর্গা দেবী বছরে একবারই আসেন। অল্পদিনেই তাকে বিদায় দিতে হয় বলে মনে যন্ত্রণাটা থেকেই যায়। তিনি জানান, দেবী এবার মর্তে এসেছিলেন দোলায় (দোলনা) চড়ে, আর ৫ দিনের ভক্তের পুজা নিয়ে ফিরে গেছেন কৈলাশে। তবে শিশু কিশোর আর তরুণদের কাছে এই উৎসব কেবলই আনন্দের। রং ছিটিয়ে, কালো রংয়ের কাপড় পড়ে, মাথায় স্কার্ফ লাগিয়ে ঢোলের তালে তালে নৃত্য যেন তাদের পাগল করে তুলেছিল। নদীর পাড়ে এই সকল তরুণ কিশোররা নাচতে নাচতে নেমে গেছেন নদীতে আবার উঠে এসেছেন ভেজা কাপড়ে। এসে আবার যোগ দিয়েছেন দূর্গা দেবীর আরতিতে।
এভাবেই নির্মল ভালোবাসায় দূর্গাকে বিসর্জন দিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন