নাইক্ষ‍্যংছড়ি সীমান্তে আবারো বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ: অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে স্থানীয়রা

fec-image

বান্দরবানের নাইক্ষ‍্যংছড়ি মায়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩৫, ৩৭ ও ৩৯ সীমান্ত পিলার বরাবর মায়ানমারের অভ‍্যন্তর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ছয়টা থেকে ১১ সেপ্টেম্বর এই রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে ভারী অস্ত্রের গুলির আওয়াজ ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দে চলতে থাকে। যার ফলে অন্যত্র সরে যাচ্ছে সীমান্তবর্তী উপজাতীয় গ্রামের শিশু ও বয়স্করা ।

ঘুমধুমের ব‍্যবসায়ী সরোয়ার পার্বত্যনিউজকে জানান, বাজাবুনিয়ার চাকমা পাড়া, হেড়ম্যান পাড়া চাকমা সম্প্রদায় গ্রামের বসবাস রত উপজাতীয়রা চলমান উত্তেজনার ভয়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের বিস্ফোরণের ধরন আর আজকের বিস্ফোরণের ধরনের ব্যবধান রয়েছে, আগে যে শব্দ করে বিস্ফোরিত হতো ওই দেশের অভ্যন্তরে, আর আজকের বিস্ফোরণের আওয়াজ ছিল অনেক তীব্র।

নিত্যনৈমিত্তিক এই ঘটনায় সীমান্ত জনপদের ঘুমধুম, চাকঢালা, জামছড়ি, আশারতলী মানুষের মনে বহুদা টেনশন কাজ করছে বলে তারা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বরত এক মাঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের ওই দেশের অভ্যন্তরে বিস্ফোরিত বস্তুগুলো হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আর্টিলারি মটারশেল।

যোগাযোগ করা হলে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, প্রতিদিনের মতো উনিও লোক মুখে শুনেছেন বিষয়টি।

উক্ত এলাকার বাসিন্দা ফয়েজুর রহমান বলেন, সিমান্তে তার সবজির বাগানসহ জুম চাষ রয়েছে তবে আজ প্রায় একমাস যাবত চলমান সমস্যাগুলোর কারণে যেতে পারছেননা ভয়ে, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দারুণ অর্থনৈতিকভাবে দৈন্যদশায় আছেন তিনি।

৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম বাংগালী জানান, গত পরশু দিন বিকালে বর্মী সেনাবাহিনীর ১‌টি ড্রোন আকাশে উড়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের ছুড়া গুলি এসে পড়ল ঘুমধুম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড তমব্রু কোনার পাড়া এলাকার বাসিন্দা সিএনজি চালক শাহাজাহান এর বাড়িতে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় একমাস ধরে বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার নাইক্ষ‍্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের আমতলী, তুমব্রু, রেজু ও বাইশফাঁড়ি আসারতলী ফুলতলি এলাকায় সীমান্তের ওপারে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। সে দেশের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান বিদ্রোহীদের গোলাগুলি চলতে থাকে। এর ফলে দুই দফায় নাইক্ষ‍্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু পাড়া এলাকায় ২০০ গজের মধ্যে দুটি মর্টার শেল ও গতকাল কোনার পাড়া সিএনজি চালক শাহাজাহানের বাড়ির সামনে তাদের ছুড়া গুলি এসে পড়ে। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এরপর গত শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার মহড়া দেয়। এ সময় যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে অন্তত ১০০ রাউন্ড গোলাবর্ষণ হয়। এর মধ্যে দুটি গোলা ঘুমধুমের রেজু আমতলী এলায় এসে পড়ে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: গোলাগুলি, নাইক্ষ্যংছড়ি, বিস্ফোরণ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন