নেতৃত্বের আলোচনায় এখন মিরাজও

fec-image

তামিম ইকবাল এশিয়া কাপ খেলতে না পারলে ওই আসরে নেতৃত্ব দেবেন তাঁর ডেপুটি লিটন কুমার দাস, এ রকম একটি সিদ্ধান্ত বিসিবি নিয়েই রেখেছিল। কিন্তু গত পরশু রাতে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে আলোচনায় মোড় ঘুরে যায় অন্য দিকে। তামিম জানিয়ে দেন, তিনি আর ওয়ানডে অধিনায়কত্ব করছেন না। তার মানে বিশ্বকাপেও অধিনায়ক লাগবে।

তামিমের অনুপস্থিতিতে গত ডিসেম্বরে দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে নেতৃত্বের পরীক্ষায় সিরিজ জয় দিয়ে উতরে যাওয়া লিটনেরই এক হিসাবে নতুন নেতা হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকার কথা। কিন্তু সেদিন রাতে নাজমুলের এমন মন্তব্যে সে সম্ভাবনাও ঝুলে আছে, ‘দু-একজনের সঙ্গে কথা না বলে এ বিষয়ে বলতে পারছি না।’ এই কথার পর বোর্ডের বিকল্প ভাবনা অনুমান করে নেওয়াটা কঠিন কিছু নয়। তাই এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসানই এই মুহূর্তের ‘পপুলার চয়েজ’।

অবশ্য বাংলাদেশের টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের ওয়ানডে নেতৃত্বে বসাও নিশ্চিত নয় বলেই জানা গেছে। যত দূর খবর, সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে আলোচনার অনেকটা জায়গাজুড়ে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজও। নাজমুল, বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস এবং তামিমের ত্রিপক্ষীয় সভায় এই অফস্পিনিং অলরাউন্ডারকে অধিনায়ক করার প্রস্তাবও উত্থাপিত হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র।

নতুন অধিনায়ক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বোর্ডের দীর্ঘমেয়াদি ভাবনাই আলোচনায় তুলে এনেছে মিরাজকে।

অবশ্য লম্বা সময়ের বিবেচনায় লিটনকেও উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই। যাঁকেই দায়িত্বটি দেওয়া হোক না কেন, বিসিবি চায় সেটি দুই বছরের জন্য তুলে দিতে। এই বিবেচনায় সাকিবের নামটিও অবধারিত হয়ে উঠতে পারছে না। ভারতেই এই অলরাউন্ডার তাঁর শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলে ফেলবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এরপর তিনি নিজের ক্যারিয়ার আরো দুই বছর লম্বা করবেন কি না, আছে সে প্রশ্নও।

তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে থাকা পরিবারের কাছে নিয়মিত ছুটে যাওয়া এবং বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলার ব্যস্ততা মিলিয়ে তাঁকে পুরো সময়ের জন্য পাওয়া নিয়েও সংশয় আছে। বোর্ড তাঁর সঙ্গে নেতৃত্ববিষয়ক আলোচনায় গেলে নিশ্চিতভাবেই এগুলো জানতে চাইবে। এ ক্ষেত্রে তুলনায় অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে লিটন ও মিরাজ। সামনে দুজনেরই লম্বা ক্যারিয়ার পড়ে আছে।

তবে নানা দিক বিবেচনায় এখন পর্যন্ত মিরাজের পক্ষেই মত ভারী বলে জানা গেছে। পারফরম্যান্সের বাইরেও দুজনের অনেক কিছুই দেখা হচ্ছে। দলে কার কেমন গ্রহণযোগ্যতা এবং দলকে এক সুতায় গাঁথার সক্ষমতা, বোর্ডের বিশ্লেষণে এসবই মূলত প্রাধান্য পাচ্ছে। তাতে লিটনের চরিত্রের অন্তর্মুখিতাও নেতৃত্বের দৌড়ে তাঁর পয়েন্ট কেটে নিচ্ছে। এর বাইরে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনও মনে হচ্ছে লিটনের বিপক্ষেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এর আগের দিনই অভিমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন তামিম।

পরদিন সে বিষয় নিয়ে একের পর এক প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে দেওয়া লিটনের কিছু জবাবও ভালোভাবে নেয়নি বোর্ডের একটি অংশ। বিশ্বকাপের সময় মাঠের বাইরের নানা কর্মকাণ্ডে চনমনে মিরাজই বরং বেশি মানানসই হবেন বলেও মনে করছেন তাঁরা। দলের সবার কাছে তাঁর ‘একসেস’ও ভোট বাড়াচ্ছে মিরাজের। ‘যাঁকেই (অধিনায়ক) বানাই না কেন, তামিম-সাকিব-মুশফিকরা সাপোর্টিং দায়িত্বে থাকবে’—পরশু রাতের সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল নিজেও আগাম সেই ইঙ্গিত দিতে চেয়েছেন কি না, আপাতত তা জানারই অপেক্ষা!

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টি-টোয়েন্টি, নেতৃত্ব, বিশ্বকাপ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন