পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় চাই অধিকতর বৃক্ষরোপণ: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা,এমপি
“বৃক্ষপানে প্রকৃতি-পরিবেশ,আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ” এই স্লোগানে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ও খাগড়াছড়ি বন বিভাগের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী (৭ দিন) বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকাল ৫টায় খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গণে এ সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলোচনা সভা, শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা ৩টি স্টল ও মেলায় অংশগ্রহণকারী স্টলসমূহের মাঝে পুরস্কার বিতরণ, সম্মাননা স্বারক ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এ সমাপনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
আলোচনা সভায় নিধি চাকমার সঞ্চালনায় অতিথি বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সবুজ বিপ্লবের সূচনাকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৭৭২ সালে বৃক্ষ (গাছ) লাগিয়ে প্রকৃতিকে সবুজায়নের স্বপ্ন দেখেছেন।বঙ্গবন্ধু দেখানোর পথকে অনুসরণ করে আসুন আমরা বৃক্ষ লাগিয়ে প্রকৃতির স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে দিই। তারা বলেন, মানুষের নির্মমতায় পাহাড়ে এখন প্রায় গাছশূন্য, ঝিরি, ছড়া, নদী শুকিয়ে পানিশূন্য হচ্ছে।আমরা ইদানিং প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বারবার আঘাত সৃষ্টি করছি।বৃক্ষনিধনের সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা অত্যন্ত প্রয়োজন।তবেই আমরা আমাদের হারিয়ে যেতে বসা প্রাকৃতিক বনজ, ফলজ ও অক্সিজেন পুনরায় ফিরে পাবো।বৃৃক্ষনিধন প্রতিরোধে দৃষ্টি দেয়া আজ বড়ই প্রয়োজন।নিকট ভবিষ্যতে পানির প্রাপ্যতা, প্রাকৃতিক-পরিবেশের ভয়াবহ বিপর্যয় ঠেকাতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য চাই অধিকতর বৃক্ষরোপণ।আমাদের জীবনে বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বৃক্ষ থেকে পাওয়া অক্সিজেন গ্রহণ করেই আমরা বেঁচে থাকি। বৃক্ষ আমাদের পরিবেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং অন্যতম বনজ সম্পদ। বৃক্ষহীন পরিবেশ জীবন ও জীবিকার জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই এই সম্পদের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি পূরণের জন্য লাগামহীন বৃক্ষনিধন বন্ধ করা দরকার। এরজন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ জোরদার করার প্রতি আমাদের সকলকে সচেতন হওয়া উচিত। ‘আসুন গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই’—এ স্লোগানকে যদি আমরা মিলিতভাবে গ্রহণ করি ও কাজে লাগাই, তাহলে আমাদের বৃক্ষসম্পদ বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবেশও সুন্দর হবে।
আলোচনা সভা শেষে এবারের বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২২ এর স্টল প্রদানকারীদের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ৩ (তিন)টি স্টলের প্রতিনিধিদের মাঝে ক্রেস্ট, সনদ ও বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।এ বৃক্ষরোপনণ অভিযান ও বৃক্ষমেলায় প্রথম স্থান হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন খাগড়াছড়ি কলেজ গেইটের “মামা-বাগিনা নার্সারি, প্রথম পুরস্কার হিসেবে নার্সারীর প্রতিনিধির মাঝে একটি এলইডি টিভি পুরস্কার প্রদান করা হয়।এ পুরস্কার গ্রহণ করেন এ নার্সারীর প্রতিনিধি রুপন হোসেন”, দ্বিতীয় স্থান হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন খাগড়াছড়ি মহিলা কলেজ রোড সংলগ্ন “জয় নার্সারি, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি স্ট্যান্ড ফ্যান প্রদান করা হয়।এ নার্সারির প্রতিনিধি হিসেবে দ্বিতীয় পুরস্কার গ্রহণ করেন উত্তম সেন এবং তৃতীয় স্থান হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন জেলা সদরের গরগয্যাছড়ির “তাপস নার্সারি”।তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ১টি ডিনার সেট প্রদান করা হয়।তাপস নার্রসারির প্রতিনিধি হিসেবে তৃতীয় পুরস্কার গ্রহণ করেন তপস।পরে মেলায় অংশগ্রহণকারী সকল স্টলের প্রতিনিধিদের মাঝে সম্মাননা স্বারক ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) গোলাম মোহাম্মদ বাতেন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক সুদর্শন দত্ত, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কাশেম প্রমুখ।এছাড়াও জেলা তথ্য অফিসার বাপ্পি চক্রবর্তী, জেলা শিশু একাডেমির কর্মকর্তা উষানু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি জিতেন বড়ুয়াসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।