পালংখালীতে ব্যাপক হারে বেড়েছে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার: নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ প্রশাসন

fec-image

বন্দুকযুদ্ধ

উখিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজার জেলার উখিয়ার ক্রাইমজোন হিসাবে খ্যাত পালংখালীতে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার ভয়ানক আকারে বেড়ে গেছে। ক্ষমতাসীন দলের বিবাদমান দু’গ্রুপের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে গত তিন দিন ধরে বটতলি ষ্টেশনে প্রকাশ্য গুলি বিনিময়ের ঘটনা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রীতিমত হতভম্ব হয়ে পড়েছে। অবৈধ অস্ত্রধারী ক্যাডারদের প্রকাশ্য গুলি বর্ষন ও অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি দেখা দিয়েছে। সাধারণ জনগণ চরম নিরাপত্তা হীনতায় বসবাস করছে।

সচেতন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দরা জানান উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বটতলি ষ্টেশন, আনজুমান পাড়া, ফারির বিল সহ বিভিন্ন গ্রামে শতাধিক সশন্ত্র ক্যাডার রয়েছে। তাদের হাতে রয়েছে প্রচুর অবৈধ অস্ত্র। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অংঙ্গ সংগঠন যুব লীগের নামধারী এসব ক্যাডার প্রকাশ্য অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করছে।

অভিযোগে প্রকাশ চিংড়ি ঘের দখল-বেদখল, ক্ষমতার ভাগাভাগি, এলাকায় আধিপত্য ও চোরা চালানী ব্যবসার ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে দু’গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে মুখোমুখি অবস্থান করছে। শক্তি প্রদর্শন করতে যুবলীগ নামধারী ক্যাডারদের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক অবৈধ অস্ত্র।

সুশিল সমাজের অভিমত, পালংখালীর বটতলি সহ বিভিন্ন গ্রামে অস্ত্রধারীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে গেছে। প্রকাশ্য অস্ত্র দিয়ে গুলি বর্ষন করলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় সাধারণ জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এদিকে গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় গুলি বর্ষন ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গত শুক্রবার সকালে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাঈন উদ্দিন ও সহকারী পুলিশ সুপার মো: আব্দুল মালেক মিয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় বটতলী স্টেশনে সংঘটিত ঘটনার বিষয় নিয়ে স্থানীয় ভাবে শালীসি বৈঠক চলাকালে মেম্বার সুলতানকে মারধরসহ নাজাহাল করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। এসময় অস্ত্রধারীরা একের পর এক গুলি বর্ষন করলে এলাকায় এক ভীতিকর পরিস্থিতিসহ আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে।

গ্রামবাসীরা আরো জানান, গত শুক্রবার সংঘটিত ঘটনার জের ধরে বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে বটতলী স্টেশনে তৃতীয় দফা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ব্যাপক গুলি বর্ষনে ঘটনা ঘটে। ঘটনায় লুৎফুর রহমান (২৮), বেলাল উদ্দিন (৩০) ও বদিউর রহমান বদি (৩৫) আহত হয়। এছাড়াও আবুল হোছন বাবুল ও আলী মনছুরের বসতবাড়ী ভাংচুরসহ লুটপাট চালিয়েছে। উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুলতান আহমদ এঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার আলী চাঁদ, জাফরুল ইসলাম বাবুল ও তার বাহিনীকে দায়ী করেছেন। বর্তমানে তিনি (বর্তমান মেম্বার) সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকির মুখে অবরুদ্ধ ও নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, পালংখালী ইউনিয়নের বটতলী গ্রামে প্রকাশ্য অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও সশস্ত্র ক্যাডারদের মহড়ায় পুরো এলাকাবাসী সম্পূর্ণ ভাবে জিম্মি হয়ে পড়েছে। নাগরিক সমাজ হয়ে পড়েছেন উদ্বিগ্ন। তারা আরো বলেন, দু’গ্রুপের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারা যুবলীগের নামধারী।

এদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আর যেন সংঘটিত হতে না পারে তার জন্য পুলিশ কড়া সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবুল খায়ের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন