পেকুয়ার আইন শৃংখলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতিতে জনমনে স্বস্তি : আলোচিত দা ও বোরকা বাহিনী উধাও

 

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া :

পেকুয়ায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতিতে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলে শিকর গজিয়ে ওঠা আলোচিত দা বাহিনী ও বোরকা বাহিনীর অস্তিত্ব এখন নেই বললে চলে। রাজনৈতিক পরিচয়ে ধাপিয়ে বেড়ানো অপরাধীরা এখন অনেকটা গা ঢাকা দিয়েছে। বিশেষ করে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রকিব যোগদান করার দু’একদিনের মাথায় পেকুয়ার পরিস্থিতি বুঝে ওঠে কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘটনা ও এক বৃদ্ধ নিহত হওয়ার পর বর্তমান ওসি নড়েচড়ে বসে টইটং ইউনিয়নেই আইনশৃংখলা কমিটির মিটিং আহবান করেন। টইটং ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকেই তিনি ঘোষণা দেন, কোন সন্ত্রাসী বাহিনীকে যে দলের পরিচয় দেয়া হোক না কেন শিকর গজিয়ে ওঠতে দেয়া হবেনা।

দীর্ঘদিন ধরে সরকারী দলের এক নেতার আশ্রয়ে টইটং ইউনিয়নের পাহড়ি অঞ্চলে ডাকাত নাছিরের নেতৃত্বে আলোচিত দা বাহিনী গড়ে ওঠে দখল বেদখল সহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে নানা অপরাধ করে ধাপিয়ে বেড়ালেও আইনের ছোয়া তাদের ঘায়েল করতে পারেনি। এক সময় দা বাহিনীর অত্যাচার অবিচার সহ্য করতে না পেরে গড়ে ওঠে একই ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা খোকনের নেতৃত্বে বোরকা বাহিনী। এ বোরকা বাহিনী প্রায় একমাস সময় ধরে শুধু দা বাহিনীর সদস্যদের ওপর বোরকা পরে হামলা চালিয়ে দা বাহিনীকে অস্থির করে তুলে। এক পর্যায়ে দা বাহিনীর প্রধান আ.লীগ নেতা জাহেদের বসতঘরে পর্যন্ত অগ্নি সংযোগের অভিযোগ ওঠে এ বোরকা বাহিনীর ওপর। পরস্পর দুটি বাহিনী আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে টইটং এর অপরাধ জগতে বেসামাল অবস্থা তখনই বর্তমান ওসি পেকুয়াতে যোগদান করে শক্তভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আপোষহীন যুদ্ধ ঘোষণা করে সন্ত্রাসীদের সমস্ত আস্তানা ছত্রভঙ্গ করে দেন।

ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে অনেকটা চিরুনী অভিযান অব্যাহত রাখলে সব অপরাধীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। চুরি ডাকাতি অন্যান্য সব সময়ের থেকে কমে গিয়েছে বলে জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের লোকজন এক বাক্যে স্বীকার করছেন। এক সময়ের আতংকের জনপদ টইটং এ অনেক আগের মতো প্রতিদিন গোলাগুলি ও হাঙ্গামার ঘটনা ঘটেনা। আলোচিত দা বাহিনী ও বোরকা বাহিনী সদলবলে এলাকা ছাড়া বলেও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে। এছাড়া শিলখালীতে গণডাকাতির ঘটনার পরও চিহ্নিত ডাকাত বেপরোয়া চলাফেরা করলেও এখন তারাও আত্মগোপনে চলে গেছে।

রাজাখালীর ওয়াকফ স্টেট কেন্দ্রিক সন্ত্রাসীদের মধ্যে অনেক গ্রেফতারী পরওয়ানার অপরাধী থাকলেও পুলিশের জিরো টলারেন্স ভুমিকার কারণে তারাও এলাকা ছাড়া হয়েগেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। গত ১ মাস ধরে মাদক ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযান ও গ্রেফতারে পেকুয়া এখন মাদক ও ওয়ারেন্ট আসামী মুক্ত বলে জানা গেছে।

ডজন মামলার ওয়ারেন্ট নিয়ে প্রকাশ্যে ধাপিয়ে বেড়ানো অপরাধীরা এখন এলাকা ছাড়া। উপজেলার চিহ্নিত কয়েকজন মাদক বিক্রেতাকে ধরে তাদের মাদক আস্তানা গুড়িয়ে দেয়ায় মাদক সেবীদের উৎপাত কমে গেছে বলে সাধারণ লোকজন মনে করেন।

দীর্ঘদিনের ধাপিয়ে বেড়া সন্ত্রাসীদের দমন ও মাদকবিরোধী সফল অভিযানের বিষয়ে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রকিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পেকুয়া থানায় যোগদানের পরদিন থেকেই প্রতিকূলতার শিকার হই। এরপর থানার সব অফিসারদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নিই সন্ত্রাস আর মাদকমুক্ত পেকুয়া জনগনকে উপহার দেবো কতটুকু সফল সেটি পেকুয়াবাসি বিবেচনা করবে উল্লেখ করে তিনি আরো দৃঢ়তার সাথে বলেন, সন্ত্রাস আর মাদকের সাথে আপোষ হবেনা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন