পেকুয়ার করিয়ারদিয়া গ্যাস সঞ্চালন লাইন বাস্তবায়ন কাজ স্থাগিত

নিজস্ব প্রতিনিধি:

পেকুয়ায় স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে অবশেষে করিয়ারদিয়া গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপন কাজ স্থগিত করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণে মালিক ও লবণ চাষিরা ক্ষতিপুরন না পাওয়ায় চাষিরা এই বিক্ষোভ করেন।

এদিকে ক্ষতিপুরন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়ায় গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপন কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সাথে বাকবিতন্ডায় না গিয়ে লবণ চাষিদের যুক্তিক দাবির প্রতি তারাও সম্মত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান এম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী গত বুধবার করিয়ারদিয়া পরিদর্শনে যান। এ সময় শতশত লবণ চাষিরা তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। তারা জানিয়েছেন চলমান গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদিয়ায় বিপুল এলাকা গর্ত করেছে। খননকৃত ওই গর্তে মাটির নিচে গ্যাস সঞ্চালনের জন্য পাইপ বসানো হচ্ছে। এতে লবণ মাঠ ওই চিংড়ি প্রজেক্ট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। লবণ ও চিংড়ি উৎপাদনে চাষিরা বিপুল অর্থ পুঁজি দিয়েছেন। এরিমধ্যে লবণ মাঠের প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে।

বর্তমান লবণ উৎপাদনে মাত্র মৌসুম চলমান। কাজ বাস্তবায়ন হলে পাঁচ শতাধিক লবণ চাষি মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। জমি অধিগ্রহণে শর্ত রয়েছে ভুমির মালিকরা টাকা পাবেন। লবণ চাষিরা ছয় মাসের জন্য জমি আগাম নিয়ে মাঠে নামেন। এখাতে তাদের ব্যয় হয় বিপুল অর্থ।

জানাগেছে চলমান কাজ অব্যহত থাকলে চাষিদের উৎপাদন গুটিয়ে যাবে। অপরদিকে চাষিদের দাবির প্রতি একমত পোষণ করেছেন সেখানকার ইউপির চেয়ারম্যান নিজেই। তিনি উর্দ্ধতন মহলকে চাষিদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি কাজবাস্তবায়ন সংস্থাকে এ সংক্রান্ত নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেন।

সাবেক ইউপি সদস্য জাফর আলম, মনির উদ্দিন, এসফার উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আমরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ বাস্তবায়ন হওয়া মানে এটি আমাদের সাথে বৈষম্য। চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলে এখানে এসেছেন।

এ ব্যাপারে উজানটিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি তোফাজ্জল করিম বলেন, এটি চাষিদের ন্যায্য দাবি। সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরিদ্র মানুষগুলোকে ঠকানোর চেষ্টা করছেন। প্রয়োজনে এলাকাবাসীকে নিয়ে চাষিদের ন্যায্য হক আদায়ের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) এর সাথে কথা হয়েছে। তিনি জনগনের যুক্তিক দাবির পক্ষে। তাই ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আমরা উন্নয়ন চাই। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নিয়েও ভাবতে হবে। কোন মানুষ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হোক এটা কখনো মেনে নেয়া যাবেনা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন