পেকুয়ায় বন বিভাগের উর্ধ্বতন টিমের গোপন সফর নিয়ে লুকোচুরি!

পেকুয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সফর নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) এঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পেকুয়া উপজেলার বন বিভাগের কার্যক্রম ও সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম পরিদর্শনে আসছেন এমন আলোচনা সমালোচনায় মাতেন স্থানীয়রা।

বিষয়টির সত্যতা জানতে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জ বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট লিয়াকত আলী সিকদার নামের এক বিট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তার সত্যতা নিশ্চিত সিসিএফ ও এসিএফ পেকুয়া রেঞ্জের অফিসার এর নেতৃত্বে শুক্রবার দুপুরের দিকে একটি টিম তাদের ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর, বনায়ন সৃজনের প্রস্তুতি সংশ্লিষ্ট নার্শারী পরিদর্শনে আসছেন বলে জানান।

এখবরের সূত্র ধরে এ প্রতিবেদক দুপুর ২ টায় বারবাকিয়া বনবিট কার্যালয়ে অবস্থান নেন। এসময় সেখানে পরিদর্শন টিমের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে বারবাকিয়া রেঞ্জের বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে বেশকিছু লোকজনদের নানা প্রস্তুতি ও তোড়জোরে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায়।

এছাড়া, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের অধীন পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জ বন অফিসের আওতাভুক্ত ৩বিটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৌড়ঝাঁফও পরিলক্ষিত হয়। সেই সাথে বনবিভাগের উর্ধ্বতন টিমের আকষ্মিক সফরের সংবাদ লোকমুখে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে দলবদ্ধ ও বিচ্ছিন্নভাবে পেকুয়ার ৩পাহাড়ি ইউনিয়ন শিলখালী, বারবাকিয়া ও টইটংয়ের হেডম্যান, ভিলেজার, বনপ্রজা ও শত শত সামাজিক বনায়ন উপকারভোগীদের পদচারণায় করে তোলেন মুখরিত।

কিন্তু দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়ও পরিদর্শন দলটি শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত গোপন সফরে পেকুয়া আসেনি। ফলে, উপস্থিত লোকজন হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যান বাড়িঘরের গন্তব্যে। সেখানে উপস্থিত লোকজনের অনুরোধে এ প্রতিবেদক চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের অধীন পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা বাবু উত্তম কুমার পালের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে, তিনি অফিসিয়াল কাজে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন বলে জানান।

এছাড়া, বনবিভাগের উর্ধ্বতন টিমের পেকুয়া সফরে আসার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি রেঞ্জার হয়ে বিষয়টি না জানা স্বত্বেও বনবিভাগের উর্ধ্বতন টিমের পরিদর্শনের মিথ্যাচার করে কি করা হচ্ছে জানিনা! সরকারের বন বিভাগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও এসিএফ(পদুয়া)র’ ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তাদের পেকুয়ায় কোন নির্ধারিত সফর ছিলনা জানিয়ে বলেন, হারবাং পর্যন্তই একটি পরিদর্শন টিমের সফর শেষ করে তারা বিকালেই গন্তব্যে ফিরে গেছেন।

এদিকে, সরকারের বনবিভাগের উর্ধ্বতন টিমের পরিদর্শনের গুজব ও কথা প্রচার করে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তা নিরব ধান্ধাবাজি ও ভোগবিলাস সেরেছেন অভিযোগ করে ক্ষুব্ধ ও হতাশ উপস্থিত লোকজন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বারবাকিয়া, টইটংয়ের বনবিট কর্মকর্তারা বনবিভাগের সহায় সম্পদ বেহাত করা ছাড়াও বন উজাড়, যত্রতত্র কাঠ চিরাইয়ের স’মিল ব্যবসার বিস্তার, বনভূমিতে প্রভাবশালীদের নানা অবৈধ স্থাপনার ব্যবসা শেষে এবার পরিদর্শন দলের সফরে আসার খবর প্রচার করে অতিরিক্ত নিরব চাঁদাবাজি ধান্ধাবাজি করেছেন বলে জানান।

এবিষয়ে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তার মন্তব্য জানতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন