পেকুয়ায় বাজার মনিটরিং হচ্ছেনা : রমজান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাড়তি দাম

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:
পবিত্র রমাজান উপলক্ষে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে সব শ্রেণীর মানুষ ব্যস্ত। যার যার মতো করে সংগ্রহ করতে ভিড় জমিয়েছে পাইকারী ও খুচরা ক্রেতারা বিক্রেতাদের দোকানে।কিন্তু লাগামহীন বাজারে দরদামের কোন স্থিতিশীলতা নেই আর ক্রেতার কোন কথা শোনার সময় বিক্রেতার নেই।

পেকুয়ায় বাজার মনিটরিং করা হচ্ছেনা এমনকি বাজার মনিটরিং করার জন্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কমিটিও করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে পেকুয়া উপজেলা সদরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজার ও পেকুয়া চৌমুহনীতে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় রমজান উপলক্ষে দ্রব্য সামগ্রীর বাড়তি চাহিদার মাঝে ভেজাল পণ্য চালিয়ে দেয়ার আশংকায় ভুগছে সচেতন ক্রেতারা। পেকুয়া বাজার ও পেকুয়া চৌমুহনীর পাইকারী ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখাগেছে রমজানের বাড়তি পণ্য চাহিদার সাথে সাথে দামও বাড়িয়ে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।

এক সাপ্তাহের ব্যবধানে প্রত্যেক নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এক সপ্তাহ পূর্বে ছোলার দাম ছিল বার্মার উৎপাদিত ৫০ টাকা তা এখন ৫৮ টাকা। প্যাকেট করা ৬০ টাকা এখন ৭০ টাকা, কেসারী বর্তমানে ৪০ টাকা যা ছিল ৩৫ টাকা, মসুর ডাল এখন কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০টাকা এক সাপ্তাহ পূর্বে ছিল ৯০টাকা থেকে ১শ টাকা, সয়াবিনের দাম বর্তমানে পূর্বের চেয়ে কমেছে বলে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানিয়েছে। চিনিও কেজি প্রতি ৫টাকা বৃদ্ধি করে বর্তমানে ৪৬ টাকা থেকে ৫০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

চাউলের বাজারেও একই অবস্থা এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তা প্রতি মোটা চাল বস্তা প্রতি ২শ থেকে ৩শ টাকা বাড়তি দাম হাকিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ৫/৬টাকা বাড়তি বিক্রি হচ্ছে। বেতি চাল, পাইজামসহ দামী চালের বাজারে তেমন পার্থক্য নেই কেজি প্রতি ২ থেকে ৩টাকা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি পার্থক্য দেখা গেছে পেঁয়াজের বাজারে পাইকারী বাজারেই কেজি প্রতি ১০টাকা ব্যবধান দাঁড়িয়েছে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫টাকা। খুচরা বাজারে ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক সাপ্তাহ পূর্বে ছিল খুচরা ৩০টাকা কেজি।

একইভাবে তরকারীর বাজারে এখন থেকে আগুন লেগেছে ক্রেতাদের শঙ্কা রমজান শুরু হলে আর ক্রয়ক্ষমতার ভিতরে থাকে কিনা। আলু দেশী এক সাপ্তাহ পূর্বে ছিল ২৫ থেকে ২৮ টাকা তা এখন ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা কেজি। কাচা মরিচ এক সাপ্তাহ পূর্বে ছিল কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা,ক্বিরা দুএকদিন ধরে বাজার থেকে উদাও হয়েগেছে। মুড়ির বাজারেও এখন থেকে কেজি প্রতি ৫থেকে ৮টাকা বেড়ে গেছে। পেকুয়ায় এখন মুড়ি বিক্রি হচ্ছে খুচরা কেজি প্রতি ৫৫টাকা থেকে ৬০টাকা। যা এক সাপ্তাহ পূর্বে ছিল ৪০টাকা। খেজুরের বাজারেও একই অবস্থা সর্ব নিম্ন পর্যায়ের খেজুর এক সাপ্তাহ পূর্বে ছিল কেজি প্রতি ৫৫টাকা  কালকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬৫টাকা ধরে। প্যাকেট খেজুর ৭০ থেকে ৮০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেকুয়া বাজারের কাচা তরকারীর পাইকারী আড়ত গুলোতে ঘুরে দেখাগেছে আড়ত ভর্তি তরকারী থাকলেও বেচা বিক্রি কম। তরকারী ভর্তি ভ্যান গুলো বাজারে প্রবেশ করার পূর্বেই আড়তদাররা পথিমধ্যেই কিনে নিচ্ছে। বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে হু করে কাচা তরকারী কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০টাকা বেড়ে গিয়েছে। সাধারণ ক্রেতারা জানিয়েছে রমজানকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত নিম্ন মানের চিনি ডাল চনা খেজুর সেমাই মওজুদ করেছে। সরকারী তরফ থেকে সঠিক মনিটরিং না থাকার কারণে বাড়তি দাম আর নিম্নমানের সামগ্রী ক্রয় করে তাদের ঘরে ফিরতে হচ্ছে।

ফলের দোকানে ঘুরে দেখা গেছে ৫০টাকা কেজির আম মাত্র একদিনের তফাতে ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বার্মার আম বিক্রি হতো ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায় তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০টাকায়। বলতে গেলে লাগামহীন বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ না নিলে নিম্ন আয়ের মানুষ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে থাকবে। পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ বলেন, গতবারের বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য ছিলাম এবার এখনো বাজার মনিটরিং এর ব্যাপারে কোন নির্দেশনা পায়নি।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর শওকত হোসেনের কাছে জানার জন্যে তার ব্যবহৃত সেল ফোনে বহুবার চেষ্ঠা করে সংযোগ না পাওয়ায় তার মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি। এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু রমজান না প্রত্যেক সময় বাজার মনিটরিং করার দায়িত্ব পালন করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্বাবধানে একটি কমিটি। এখনো পর্যন্ত রমজান উপলক্ষে মনিটরিং কমিটি মাঠে নামেনি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন দু এক দিনের মধ্যে অবশ্যই কাজ শুরু করার জন্যে বলা হয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন