পেকুয়ায় মোবাইল কোর্টের নামে পুলিশের চাঁদাবাজী
নিজস্ব প্রতিবেদক.
পেকুয়ায় মোবাইল কোর্টের নামে পুলিশের চাঁদাবাজীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, ১৩ জুলাই বুধবার বিকাল ৪ টায় পেকুয়া থানার এ এস আই সুমনের নেতৃত্বে কনষ্টেবল পারভেজ (বি প্লাস)সহ সঙ্গী নিয়ে বরইতলী মগনামা সড়কের পেকুয়া চৌমুহনী পয়েন্টে মোটর সাইকেলের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এসময় চৌমুহনী চৌ রাস্তা মোড়ে এ এস আই সুমন একটি চায়ের দোকানের ভিতরে বসে কনষ্টেবলদের দিয়ে রাস্তা থেকে মোটরসাইকেল আটক করে। পারভেজ (বি প্লাস) নামের কনষ্টেবল কাগজপত্র যাচাইবাচাই করে। যাচাই বাচাই করার নামে মোটরসাইকেল মালিককে এক পাশে নিয়ে গিয়ে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা নিয়ে বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেলের লাইসেন্স সহ প্রয়োজনী ডকুমেন্ট না থাকা স্বত্বেও ছেড়ে দেয়। এতে স্থানীয়রা মোবাইলে ছবি তুলতে চাইলে কনষ্টেবল পারভেজসহ অন্যান্যরা স্থানীয়দেরকে লাঠিচার্জ করে।
খবর পেয়ে এক সংবাদকর্মী ছবি তুললে কনষ্টেবল পারভেজ সংবাদকর্মীকে এ এস আই সুমনের কাছে নিয়ে যায়। ঐ সংবাদকর্মী জানায় এ এস আই সুমন একটি চায়ের দোকানে ভিতরে বসে এ ধরনের মোবাইল কোর্টের ছবি না তুলার নিষেধ করেন এবং ক্যামরা থেকে ঐ ছবিগুলো ডিলিট করে দেন। ঘটনার পর বিকাল ৫টায় চকরিয়ার পারভেজ নামে এক যুবকসহ ৩ জন পেকুয়া বাজার থেকে এফার সি ব্র্যান্ডের একটি মোটর সাইকেলযোগে চকরিয়া যাওয়ার পথে চৌমুহনীতে কনস্টেবল পারভেজ (বি প্লাস) আটক করে। আটক করার পর তাদের থেকে মোবাইল ও পকেটে থাকা ৩ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে ঐ কনস্টেবল পারভেজ তাদেরকে মোটর সাইকেলের কাগজের নামে তাদের টানা হেচড়া শুরু করে। তারা মোটর সাইকেলের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দেখার পর ক্ষান্ত হয়নি। এক পর্যায়ে তাদের গলায় ধাক্কা দেয়। পরে এ এস আই সুমন ঐ চায়ের দোকান থেকে বের হয়ে এসে মোটর সাইকেলটি থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পেকুয়া মডেল জি এম সি ইনষ্টিটিউশনের গেইটের দক্ষিনে গিয়ে টাকা নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু করেন। অনেকক্ষণ পর ঐ কনস্টেবল পারভেজ হাতিয়ে নেওয়া ৩ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার টাকা রেখে দিয়ে আর ২ হাজার টাকা ফেরত দেয়। কিন্তু তিন জন নেওয়ার কারণে মামলা দিয়ে মোটর সাইকেলটি ছেড়ে দেয়। এসময় পারভেজ এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, সে প্রয়োজনী কাগজ পত্র দেখার পরও ১ হাজার নিয়েছে এ এস আই সুমন। সে আরো জানায় টাকা নেওয়ার পরও মোটর সাইকেলে ৩ জন নেওয়ার অপরাধে মামলা দেয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এভাবে প্রায় প্রতিদিন মোবাইল কোর্টের নামে পুলিশ চাদাঁ আদায় করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে এ এস আই সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘এক সংবাদকর্মী ছবি তুলছে যা আমি তাকে চিনতে পারিনি’। আর টাকা আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের অভিযোগ কেউ আমাকে দেয়নি। ভোক্তভোগী কেউ অভিযোগ দিলে ঐ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চকরিয়া পেকুয়া) কাজী মতিউল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনা সত্য হলে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।