পেকুয়ায় ৭ মামলার হুলিয়া নিয়ে বিপাকে এক চিংড়ি চাষী, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত

পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় ৭টি মামলার হুলিয়া নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছে এক চিংড়ি চাষী। জায়গার বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন একের পর এক ৭টি ফাঁসানো মামলায় জড়িত করেছে ওই যুবককে। এদিকে ঘটনা স্বর্বস্ব এমনকি ঠিকানা বিহীন এসব মামলায় ফেঁসে গিয়ে চরম নিরাপত্তাহীন হয়েছেন এ হতভাগা যুবক। মামলার জালে ফেঁসে গিয়ে ওই যুবকের স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘিœত হয়েছে।

একই সাথে ওই যুবকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের অব্যহত থাকায় রাষ্ট্রের মৌলিক নাগরিক অধিকার ও দেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে চরম বৈষম্যের অভিযোগ তোলা হয়েছে। একজন সাধারণ মৎস্য চাষির বিরুদ্ধে বারবার মামলা রেকর্ড় হওয়ায় পেকুয়ার সচেতন মহল এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা এটিকে সভ্য সমাজে মানবতার বিরুদ্ধে এক নিকৃষ্ট বর্বরতা হিসেবে অবহিত করেছেন। সচেতন মহল একজন নাগরিকের বেচে থাকার অধিকারের পরিপন্থি এ মামলা দায়েরের ঘটনাকে মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লঙ্গন বলে মন্তব্য করেছেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায় উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যাঘোনা এলাকার হাজ্বী নুরুল আবছারের পুত্র নুরুল আজিম এর সাথে একই এলাকার হাজ্বী মজু মিয়ার পুত্র কামাল হোসেনদের মধ্যে মৎস্য প্রজেক্টের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৪ বছর ধরে মগনামা মৌজার রুপাই খালের কিছু জায়গা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিক বৈঠক হয়েছে।

জায়গার কাগজপত্র ও স্বত্তের বিষয়ে নুরুল আজিম বৈধ থাকায় কামাল হোসেন ব্যর্থ হয়েছে। এনিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩ বছর পূর্বে কামাল হোসেন, নুরুল আজিমকে হামলা চালিয়ে আহত করে। পরে নুরুল আজিমের ভোগ দখলীয় প্রায় ৭একর মৎস্য প্রকল্প থেকে কামাল হোসেন ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।

এ সময় নুরুল আজিম কামাল হোসেন সহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে গত ১০/৮/১৪ তারিখে চকরিয়া সি.জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং ৩৯৩/১৪। আদালত মগনামা ইউপির চেয়ারম্যানকে এর তদন্ত ভার ন্যস্ত করেন। চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেন।

অভিযোগ উঠেছে কামাল হোসেন প্রভাবশালী হওয়ায় চেয়ারম্যান আদালতের প্রতিবেদন প্রেরন করেননি। এদিকে কামাল হোসেন তাদের প্রতিপক্ষ নুরুল আজিমকে ঘায়েল করতে শুরু করে নানা অপতৎপরতা। বিশেষ করে মৎস্য প্রজেক্ট নুরুল আজিমের কাছ থেকে জবর-দখলে নিতে গত দু’বছরের মধ্যে নুরুল আজিমকে ৭টি মামলায় আসামী করে।

এসব মামলার মধ্যে চাঁদাবাজি, জখমী, লুটপাট, গাড়ি ভাঙচুরসহ একাধিক জটিল মামলাও রয়েছে। তবে ওই সব মামলায় কোনটিতে তার ঠিকানা উল্লেখ করেনি। পরে মামলাবাজ চক্রটি ঠিকই অভিযোগপত্র গঠনে তার ঠিকানা উল্লেখ করে আদালতে প্রেরণ করে। তার বিরুদ্ধে ফাঁসানো মামলাগুলো হলো পেকুয়া থানা মামলা নং-০৬/১৫, ১৪/১৫, ১৭/১৫, সি.আর নং-৭০১/১১, ১০২৩/০৮ সহ ৭টি মামলা। এসবের মধ্যে সি.আর ৭০১/১১ ও ১০২৩/০৮ এ ২টি মামলা মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় আদালত খারিজ করে।

নুরুল আজিম জানিয়েছেন, বর্তমানে কামাল হোসেন গং তাকে হত্যা করার চক্রান্ত করছে। এমনকি আরো একাধিক মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার মিশনে নেমেছে। আমি কঠিন অবস্থায় পড়েছি। চলাফেরা বন্ধ হয়ে গেছে। সংসার ও অন্ন থেমে গেছে। এসব গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচতে চাই। রাষ্ট্রের কাছে আমার আকুল কাকুতি আমাকে বেঁচে থাকার নৈতিক অধিকার দেওয়া হোক।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন