১৩ মে নয়া পল্টনে সমাবেশ দিয়েছে বিএনপি

 ১৩ মে নয়াপল্টনে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারকে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম প্রত্যাখ্যান করায় ও ৫ মে রাতে হেফাজতে ইসলামের উপর গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদে ১৩ মে সোমবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে  বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

তিনি  আরো জানান, সোমবারের ওই সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। রাত সোয়া নয়টা থেকে শুরু হয়ে স্থায়ী কমিটির এ বৈঠক রাত ১১টার দিকে শেষ হয়।

বৈঠকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে অংশ নেন ড. আর এ গণি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মইন খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্রিগেডিয়ার (অব.) আসম হান্নান শাহ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সারোয়ারি রহমান।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, “হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের ওপর অভিযানের ব্যাপারে যেসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম তিনি সেসব বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। প্রধানমন্ত্রী অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় কথা বলবেন।”
 
বৃহস্পতিবার বিকেলে ১৮ দলের ডাকা দুদিনের হরতাল শেষে নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গত রোববার রাতে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযোনে হতাহতের প্রতিবাদে এ হরতাল ডাকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল।

দুদু বলেন, “ প্রধানমন্ত্রী বিখ্যাত পরিবারের সন্তান। তিনি শেখ মুজিবুরের কন্যা। তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কথা আশা করি।”

তিনি বলেন, “হেফাজতের কর্মীদের সরাতে সেদিন রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতজন সদস্য অংশ নিয়েছে? সাদা পোশাক পরে যারা গুলি করেছে, তাদের কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে? কত রাউন্ড গুলি করা হয়েছে? ‍কতজন নিহত হয়েছে? আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তা জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি তা না বলে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন।”

‘দেশবাসি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ১৮ দলের ডাকা হরতাল দেশবাসী সফল করেছে’ এমন দাবি করে তিনি বলেন, “গণবিচ্ছিন্ন সরকারের বিরুদ্ধে সকল বাধা উপেক্ষা করে জনগণ মাঠে নেমেছে। হরতাল সফল করে তারা প্রমাণ করেছে খুনি ও নির্যা।তনকারী সরকারের ক্ষমতায় রাখতে চায় না। তারা সরকারের পদত্যাগ চায়।”

এসময় জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সবেমাত্র রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আগে রায়ের কপি দেখি । কোথায় কোন আইন মানা হয়েছে বা কী বাদ দেয়া হয়েছে, তা আগে দেখি। তারপর এ বিষয়ে কথা বলবো। এছাড়া পররাষ্টমন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলছেন, “এটা আন্তর্জাতিক নয়, ডোমেস্টিক আদালত। তাই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক চাপ নেই। সে কারণে আমরা বলবো এ আদালত আন্তর্জাতিক মানের কিনা তা পরিস্কার হলে ভালো হবে।”

তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। অন্যথায় যে কোনো পরিস্থিতির দায় আপনাদের নিতে হবে।”

দুদু অভিযোগ করে বলেন, “দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও সবশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে একটি লিফলেট ছাপানোর জন্য পল্টনে একটি প্রেসে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বুধবার রাতে পুলিশ তা জব্দ করে এবং প্রেসের কর্মচারীদের গ্রেফতার করেছে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “গ্রেফতার করার জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা ও ১৮ দলের শরিক বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মুক্তি পাওয়ার পর মার্চ মাসের একটি মামলায় শ্যোন এ্যরেস্ট দেখিয়ে চার দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়।”

বৃহস্পতিবারের হরতালকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে তিনজন নিহত, ১০৯ জনের বেশি আহত ও ৯৭জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি করেন দুদু।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন