প্রধানমন্ত্রী আসছেন তাই বর্ণিল সাজে সাজছে খাগড়াছড়ি

24842_b

দুলাল হোসেন, খাগড়াছড়ি॥
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাগড়াছড়িতে আসছেন দীর্ঘ ১৬ বছর পর। দলীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আগামী ১১ নভেম্বর সোমবার আওয়ামীলীগের সভাপতি ও  প্রধানমন্ত্রী খাগড়াছড়ি আসার জন্য সম্মতি প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর  আগমনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতিসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রাণ চাঞ্চল্য ও ব্যস্ততম সময় কাটাতে দেখা গেছে । এ উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলার প্রতিটি জনপদ যেন জেগে উঠেছে। রাস্তা ঘাট, মাঠ, জনপদ, চায়ের দোকান আড্ডা সর্বত্র প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে চলছে আলোচনা।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নতুন রূপে সাজতে শুরু করেছে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের রাস্তা ঘাট,ব্রীজসহ প্রতিটি স্থাপনা। পৌর শহরের মূল কেন্দ্রে অবস্থিত শাপলা চত্তরের শাপলা ফুল এক নয়াভিরাম দৃশ্য ধারণ করেছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তোরণ নির্মিত হচ্ছে। খাগড়াছড়িরর প্রিন্টিং প্রেসগুলোতে বিভিন্ন রং বেরংয়ের পোস্টার ও ডিজিটাল ব্যানার বানানোর ধুম পড়েছে।

প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজকে প্রচার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন আ’লীগ নেতাকর্মীরা। সফরকালে তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও তিনি  খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন ।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী খাগড়াছড়ি এসে ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত ১২ টি প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনযোগ্য প্রকল্পগুলো হল-(১)রামগড় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, (২) এপিবিএন বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টার, (৩) ১০০০ মেট্টিক টন ধারণযোগ্য খ্যাদ্য গুদাম, (৪) ভাইবোনছড়া ব্রীজ, (৫) দীঘিনালা আবহাওয়া অফিস, (৬) মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, (৭) বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা), (৮) খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজ একাডেমিক ভবন, (৯) মহালছড়ি স্কুল,  (১০) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার, (১১) খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন স্কুল ভবন ও (১২) খাগড়াছড়ি মরামা উন্নয়ন সংসদের ছাত্রাবাস উন্নয়ন কাজ।

এছাড়াও তিনি আরো ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানিয়েছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনযোগ্য প্রকল্পগুলো হল: (১) গ্রীড সাব-স্টেশন, (২) দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, (৩) সিএমএম কোর্ট, (৪) তাইন্দং আশ্রায়ন প্রকল্প ও (৫) শান্তি স্তম্ভ।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সর্বশেষ গত ১৯৯৮সালের ১০ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে তৎকালীন শান্তিবাহিনী’র অস্ত্রসমর্পন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন । এরপর তিনি আর খাগড়াছড়িতে আসেনি । তাই এবার তাঁর খাগড়াছড়ি সফর অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ।  

এদিকে প্রধানমন্ত্রী’র আগমনকে সফল ও সার্থক করার লক্ষ্যে  খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজ,দলীয় অফিসে জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদক মন্ডলীর দফায় দফায প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে । জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এসব সভায় সভাপতিত্ব করছেন। দলের সহ-সভাপতি চাইথোঅং মারমা, মংক্যচিং চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক এসএম শফিসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সভায় উপস্থিত থাকছেন ।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, প্রধানমন্ত্রী’র খাগড়াছড়ি সফর উপলক্ষে জেলা আওয়ামীলীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং এ জনসভা জনসমুদ্রে পরিনত করতে ব্যাপক লোক সমাগমের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সকল ইউনিটকে বলা হয়েছে। 

জেলা আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী’র জনসভার স্থান খাগড়াছড়ি সরকারী হাই স্কুল মাঠে হওয়ার কথা থাকলে ও ঐদিন জেএসসি পরীক্ষা থাকার কারণে তা খাগড়াছড়ি ষ্টেডিয়ামে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে ১১নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিন । এদিন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মহাজোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন খাগড়াছড়িবাসী’র জন্য মাইলফলক বলে মন্তব্য করেন খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘকাল যাবত পার্বত্য চট্টগ্রামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ অবসান ঘটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মাধ্যমে। এ জন্য  পার্বত্যবাসীর তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন