ফিলিস্তিনি এক তরুণীর বিয়ের মর্মস্পর্শী কাহিনী

106811_1

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনি তরুণী রীম আবু ওয়াদান আগামী ২৭ জুলাই বিয়ের সাদা পোশাক পরবেন।তার সেই আনন্দঘন মুহূর্তে স্বজন-পরিজন সবাই উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু শুধু তিনিই থাকবেন না যাকে রীম জীবনসঙ্গী করে নিচ্ছেন।

রীমের হবু বর বর্বর ইসরাইলিদের কারাগারে বন্দী।

ইসরাইলের ১৭টি জেলখানায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০০ এর অধিক ফিলিস্তিনি বন্দী আছেন। তার মধ্যে ৫৪০ জনের অধিক ফিলিস্তিনিকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই তথাকথিত প্রশাসনিক আটকাদেশ দিয়ে বন্দী রাখা হয়েছে।

বিয়ের পর নিয়ম মেনেই পশ্চিমতীরে শাশুরির সাথে সাক্ষাৎ করবেন অষ্টাদশী এই তরুণী।বিয়ের দিন স্বামীকে পাবেন না রীম। কবে পাবেন তার সাক্ষাৎ কিংবা আদৌ পাবেন কিনা তাও জানা নেই তার।তবে এতে কোনো কষ্ট নেই রীমের। তিনি বরং অত্যন্ত গর্বিত।

‘ফিলিস্তিনিদের জন্য যে মানুষটা তার পুরোটা জীবন উৎসর্গ করেছেন আমি অন্তত তার জন্য এতটুকু তো করতে পারলাম,’ গর্বিত উচ্চারণ রীমের।

সর্বশেষ রীম তার হবু স্বামী মাহমুদকে সরাসরি দেখেছিলেন ২০০২ সালে- যখন রীমের বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর।এরপরই ইসরাইলি বর্বর বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায় এবং ইসরাইলি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পরিকল্পনার অভিযোগে কারারুদ্ধ করে।তাকে তিনবার যাবজ্জীবন এবং আরো ৩০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মাহমুদের মা যখন তার কারাবন্দী ছেলেকে বিয়ে করার জন্য রীমকে প্রস্তাব পাঠান তখন যেন আনন্দের আর সীমা ছিল না গাজা উপত্যকার বাসিন্দা রীমের।রীমের কাছ ইসরাইলি অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গর্বের বিষয় বৈকি।

‘আমি তাকে এই বার্তা দিতে চাই যে বন্দিত্ব চিরস্থায়ী হবে না। আশা এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞা থাকলে সবকিছুই সম্ভব।’

২৭ জুলাই রীমের বিয়েতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পরদিন মাহমুদের মা তার ছেলের সাথে কারাগারে সাক্ষাৎ করে ছেলেকে বিয়ের আংটি পরিয়ে দেবেন যাতে খোদাই করা থাকবে রীমের নাম।

রীম বলেছেন, বিয়ের পরপরই মাহমুদের সাথে কারাগারে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। এজন্য অবশ্য ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের দরকার হবে।তিনি মাহমুদের ফেরার অপেক্ষায় থাকবেন।

‘তিনি বিজয়ীর বেশে ফেরার পর্যন্ত আমি তার জন্য অপেক্ষা করব,’ বলেন রীম।তার আশা ফিলিস্তিনের সাথে ইসরাইলের বন্দী বিনিময়ের সময় ভবিষ্যতে মুক্তি পাবেন মাহমুদ।

রীমের বাবার অনুভূতিও তার মেয়ের মতই। বন্দিত্ব চিরস্থায়ী হয় না,’ বলছিলেন তিনি।‘আমি এবং আমার মেয়ে সুখী যে আমরা কারাগারে মাহমুদকে সুখী করতে পারছি।’

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন