বাঘাইহাট-সাজেক রাস্তার সড়ক দূর্ঘটনা ও প্রাণহানি রোধে সেনাবাহিনীর স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ

সাজেক প্রতিনিধি:
প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্য্যের আধার রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত সাজেক উপত্যকা ইতোমধ্যে দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়, মনোমুগ্ধকর এবং চিত্তাকর্ষক একটি স্থানের নাম। পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে ইতোমধ্যেই সাজেকে প্রায় শতাধিক রিসোর্ট গড়ে উঠেছে এবং উন্নত হয়েছে মানুষের জীবন-জীবিকা ও আর্থসামাজিক ব্যবস্থা। সাজেকের মত দূর্গম এলাকায় রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য। সাজেক উপত্যকাটি রাঙ্গামাটি জেলা হতে ১৫০ কিঃমিঃ এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর হতে ৫৫ কিঃমিঃ দুরে অবস্থিত, যা এই স্থানটিকে রাঙ্গামাটি জেলা সদর ও বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর হতে প্রায় বিচ্ছিন্ন এক জনপদে পরিণত করেছে। প্রাকৃতিক দূর্গমতা সত্ত্বেও প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমন পিপাসুদের নিয়মিত আগমনে এলাকাটি সার্বিকভাবে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে এবং এ এলাকার জনবসতিকে বানিজ্যিক ও অর্থনৈতিকভাবে গতিশীল করেছে।
সাজেক গমনের এই সুদীর্ঘ রাস্তায় প্রচুর বাঁক ও রাস্তার দুই পার্শ্বে প্রচুর জঙ্গল ও রিজার্ভ ফরেস্ট থাকায় দৃষ্টিসীমা প্রায়শঃই সীমিত থাকে। সাজেকগামী রাস্তার পার্শ্বে প্রচুর বসতবাড়ি ও দোকান থাকায় অনেক সময় প্রাপ্ত বয়স্ক ও ছোট শিশুরা অসতর্কতার কারনে রাস্তার উপর চলে আসে এবং দূর্ঘটনার শিকার হয়। ফলশ্রুতিতে পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়ী/মাইক্রোবাস/জীপ/মটরসাইকেল সমূহ প্রায় ক্ষেত্রেই দূর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় যেকোন দূর্ঘটনা, দূর্যোগ বা সংকটে দূর্গতদের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই দূর্ঘটনা প্রবণ মাসালং-সাজেক পর্যন্ত ১৮ কিঃমিঃ রাস্তার দূর্ঘটনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন এর দিক নির্দেশনায় বাঘাইহাট জোন এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সাজেক উন্নয়নের ফোরাম ও এলাকার অধিবাসীদেরকে একত্রিত করে রাস্তার দুপার্শ্বে আচ্ছাদিত ঘন জঙ্গল সমূহ পরিস্কার করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। অতীতে বিভিন্ন সময়ে দূর্ঘটনা প্রতিরোধ ও সড়ক পার্শ্বাবর্তী জঙ্গলসমূহ পরিস্কার করার বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তা খুব একটা ফলপ্রসু হয়নি। বাঘাইহাট জোনের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মাচালং-সাজেক এলাকার যানবাহন দূর্ঘটনাজনিত প্রাণহানী ও ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা।
ইতোমধ্যে, বাঘাইহাট জোন তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সকল ধরণের গাড়ির চালকদেরকে সজাগ করার লক্ষ্যে জোন সদর ও সাজেক-রুইলুই পাড়ায় নিয়মিত ব্রিফিং প্রদানের ব্যবস্থা ও দূর্ঘটনারোধে সচেতনতামূলক বিভিন্ন পোস্টার স্থাপন করেছে। এলাকার জনসাধারণকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহিনীর বাঘাইহাট জোন এই দূর্গম পার্বত্য এলাকায় সার্বক্ষণিক জানমাল ও চলাচলের নিরাপত্তা বিধান করে যাচ্ছে
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন