বান্দরবানে আমন ব্রি-৩৩ জাতের ধান কাঁটা শুরু

Bandarban paddy pic-2 24.10

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ভোরের কুয়াশায় পাঁকা ধানের শীষে ঝরছে বিন্দু বিন্দু শিশির। বাতাসে দুলছে পাকা আমন ধানের শীষ। কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনালী হাসি। পাঁকা ধানের গন্ধে চারিদিকে মৌ মৌ করছে। কষ্টের ধান দেখে কৃষকের মুখ খুশিতে ভরে উঠছে। ধার-দেনা করে আমন ধান চাষ করলেও লাভ-ক্ষতির হিসাব মেলাতে পারছেন না কৃষক। তারপরও মাঠে পাকা ধানের শীষ দেখে ভরে উঠছে কৃষকের বুক।

পাহাড়ে ধানের জমি কম হওয়ায় আগাম জাতের ব্রি-৩৩ ধান চাষের দিকে ঝুঁকছে কৃষকরা। পানির অভাবে প্রতি বছর এসব জমিতে একটি ফসল উৎপন্ন হত। কিন্তু ব্রি-৩৩ আগাম জাতের ধান উৎপাদিত হওয়া ফসল ঘরে তোলার পর একই জমিতে শীত কালীন শাঁক-সবজির চাষ করে বাড়তি আয়ের সপ্ন দেখয়ে কৃষকরা। ফলে কৃষকরা ব্রি-৩৩ এর দিকে ঝুঁকছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ১১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। মাত্র ১১৮ দিনে পাঁকা ধান ঘরে তোলা যায়। গড়ে সাড়ে ৪ থেকে ৫ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয়।

বান্দরবান সদর উপজেলায় এবার ২৬০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্য ব্রি-৩৩ জাতের আগাম ধান ১৩৩ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। আমন মৌসুমে ১৩৩ হেক্টর জমিতে ৪৮টি প্রদর্শনী চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার কালাঘাটা, বালাঘাটা, সুলতানপুর, সোয়লক, রাজবিলা, রেইচা, খানসামা, বাঘমারা, থোয়ংগ্যা পাড়া এলাকায় দিগন্ত জুড়ে দোল খাচ্ছে স্বপ্নের কাঁচা-পাঁকা ধান। অনেক জমিতে সোনালী রঙ ধারণ ধীরে ধীরে শীষগুলো নুইয়ে পড়ছে। আবার অনেকে পাঁকা ধান কেটে ঘরে তুলছে। জেলায় ব্রি-৩৩ ছাড়াও ব্রি-১১, ৪০, ৪১, ৪৯, ৩০, ৫২ জাতের ধান চাষ করেছে জানিয়েছেন একাধিক কৃষক।

কৃষক আবুল কালম জানান, অন্যবারে চেয়ে এবারে আমনের ফলন ভাল হয়েছে। আগাম জাতের ধান ব্রি-৩৩ চাষে পোকা মাকড়েরর আক্রমণ বেশী হওয়ায় কীটনাশকের পরিমাণ বেশী দিতে হয়েছে। ফলন হেক্টরে ৪ টন ধান উৎপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রি-১১ ধান হেক্টরে ৫ টনের অধিক ফলন উৎপন্ন হয়।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, আমন মৌসুমে লক্ষমাত্রা নিয়ে ২৬০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্য ১৩৩ হেক্টর জমিতে ব্রি-৩৩ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। কম বয়সি জাতের ধান চাষ করে কৃষকরা যেমন লাভবান হচ্ছে তেমনি শীতকালীন আগাম শাঁক সবজীর চাষ করে দেশের মোট উৎপাদনে রাখতে পারবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন