বালুখালীর সরকারি বনভূমিতে রোহিঙ্গাদের অবৈধ ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ

ঘুমধুম প্রতিনিধি:

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা- পুলিশের পৈচাশিকতার পর বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে মংডুসহ আক্রান্ত এলাকা। এ কারণে দেখা দিয়েছে খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের অভাব। তাই বেঁচে যাওয়া অধিবাসীরা মাতৃভূমি ছেড়ে বাংলাদেশে আসা অব্যাহত রেখেছে। সীমান্ত অতিক্রম হয়ে বাংলাদেশে এসে পাহাড়ে আবাস গড়ছে রোহিঙ্গারা। গড়ে তুলছে নতুন রোহিঙ্গা বস্তি।

অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় বালুখালীর পাহাড়ি এলাকায় ঝুপড়ির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলছে। এ পর্যন্ত কুতুপালং ও বালুখালীর সংরক্ষিত ও রক্ষিত প্রায় ২০০ একর বনভূমিতে ২০ হাজার রোহিঙ্গা বসতি গড়ে উঠেছে বলে বন বিভাগ দাবি করছে।

গত কয়েকদিনের সহিংসতায় মংডুর বড় গৌজবিল ও ছোট গৌজবিল, বুচিডং, ফকিরা বাজার, সাব বাজার, খিয়ারী পাড়া, বলি বাজার গ্রাম থেকে ১৮০০ পরিবারের আরো কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে বালুখালী নতুন বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছে।

মংডুর বড় গৌজবিল গ্রামের বদি আলম (৪৫) জানান, স্ত্রী ও সায়েরা (১৫), রাশেদা (১২), আরফাত (১০), লাইলা (৮), মুফিজ (৬) ও পুতিয়া (২) নামের সন্তানদের নিয়ে সোমবার ভোররাতে তারা ধামনখালীর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছে।

বালুখালী নতুন বস্তির ১নং ব্লকের মাঝি করম আলী জানান, রোহিঙ্গা আসা অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন ঝুপড়ি ঘর তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক ঝুপড়ি ঘর তৈরির স্থান দখল দেয়ার নামে টাকা আদায় করছে।

বনভূমি দখল অব্যাহত থাকার ব্যাপারে বালুখালী বনবিট কর্মকর্তা মোবারক আলী জানান, পশ্চিম বালুখালী এলাকায় ১০৫ একর বনভূমি এখন রোহিঙ্গাদের দখলে। স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এসব রোহিঙ্গা বনভূমি দখল করে আশ্রয় নিয়েছে। বিষয়টি বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

উখিয়া সদর বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, তারা দু’দফায় প্রায় ১২০টি ঝুপড়ি ঘর উচ্ছেদ করেছে। দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করলে স্থানীয় কতিপয় দুর্বৃত্তের ইন্ধনে রোহিঙ্গারা বনকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় বনকর্মীসহ ১৫জন আহত হন।

তিনি আরও বলেন,  কুতুপালং বস্তি এলাকায় শতাধিক একর বনভূমি দখল করে রোহিঙ্গারা ঝুপড়ি নির্মাণ করেছে।

উখিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মুনিরুল ইসলাম জানান, নতুন করে গড়ে ওঠা ঝুপড়ি ঘর উচ্ছেদের ব্যাপারে তিনি বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন।

বালুখালী ইউপি সদস্য নুরুল আবছার জানান, কুতুপালং বস্তিতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত জায়গা দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে। তাছাড়া বনকর্মীরা তাদের ঝুপড়ি ঘরগুলো উচ্ছেদ করে দেয়ায় ওইসব রোহিঙ্গা বালুখালী পশ্চিমপাড়া এলাকার বনভূমিতে আশ্রয় নিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন