বিদ্রোহীদের হামলার পর ভারতে পালাল মিয়ানমারের আরও ২৭৬ সেনা

fec-image

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সাথে চলছে সামরিক বাহিনীর এই সংঘাত।

আর সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীর সাথে সংঘর্ষের মধ্যেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে পালিয়ে গেছে মিয়ানমারের প্রায় ৩০০ জন সৈন্য। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষের পর তারা ভারতে প্রবেশ করেন।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের বিদ্রোহী বাহিনী ও জান্তা-বাহিনীর মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে এবং গত দুই দিনে মিয়ানমার ছেড়ে আরও সেনা সদস্য মিজোরামে প্রবেশ করেছে। গত বুধবার বিকেলে মিয়ানমারের ২৭৬ জন সৈন্য তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে মিজোরাম-মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত ট্রাইজেকশনের বান্দুকবাঙ্গা গ্রামে পৌঁছেছে বলে বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।

সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর শিবিরগুলো দখল করার পরে সেনা সদস্যরা ভারতে আশ্রয় নেয়। তবে তাদের দ্রুততম সময়ে প্রত্যাবাসন করা হবে।

ভারতে পালিয়ে আসা এসব সৈন্যদের আসাম রাইফেলস ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে।

মূলত আরাকান আর্মি ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করার কয়েকদিন পর দেশটির এতো বিপুল সংখ্যক সেনার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার খবর পাওয়া গেল। সর্বশেষ এই আগমনের সাথে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে মিয়ানমার থেকে ভারতে পালিয়ে আসা সৈন্যের সংখ্যা ৬৩৬ জনে পৌঁছেছে।

অবশ্য মিয়ানমারের সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করলেও কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের আবারও নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

এর আগে পালিয়ে আসা সেনাদের ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) হেলিকপ্টারে করে মণিপুরের মোরেহতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে সেখান থেকে তাদেরকে মিয়ানমার সেনা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে ভারত।

এছাড়া গত ২ এবং ৯ জানুয়ারি আইজলের লেংপুই বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বিমানে করে বিপুল সংখ্যক সৈন্যকে তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে তিনটি জাতিগত সংখ্যালঘু বাহিনী মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। আক্রমণের পর তারা কিছু শহর ও সামরিক পোস্ট দখল করে নেয় এবং সরকারি সৈন্যরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করার পর এবারই প্রথম মিয়ানমারের জেনারেলরা সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্ব সংবাদ, ভারত, মিয়ানমার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন