বৌদ্ধ মন্দিরে দুর্বৃত্তদের হামলার চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির পুলিশ- জনতা

IMG_4141 (2) copy

বাইশারী প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ধাবনখালী মারমা পাড়া বৌদ্ধ মন্দিরে দুর্বৃত্তদের হামলার চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে পুলিশ ও জনতা।

প্রত্যক্ষদর্শী বৌদ্ধ মন্দিরে অবস্থানরত বৌদ্ধ ভিক্ষু উ. পাইন্দেমা জানান, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটের সময় হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত এসে প্রথমে জানালা এবং পরে জোরে দরজা ধাক্কা দেয়। ঐ সময় দুর্বৃত্তদের ধাক্কায় দরজার একটি কব্জা খুলে মাটিতে পড়ে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে বৌদ্ধ মন্দিরে মাইকে ঘোষণা দিলে পুলিশ ও জনতা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। বৌদ্ধ ভিক্ষু ধারণা করেছেন, দুর্বৃত্তদের দলে তিন থেকে চারজনের মত থাকতে পারে। তিনি আরো জানান, এতে বড় ধরনের কোন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি।

বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবু মুছা বলেন, তিনি বিষয়টি শুনার সাথে সাথে দ্রুত ঘটনাস্থলে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পৌঁছান। তাছাড়া সন্ত্রাসীদের ধরতে রাতভর আশপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। পাশাপাশি এখনো পর্যন্ত পুলিশের টহল অব্যাহত সহ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। তিনি দাবি করেন, মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের মত কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

উক্ত পাড়ার বাসিন্দা নারিচবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংহ্লায়েই মার্মা বলেন, মংশৈলুং মার্মা হত্যাকান্ডের পর থেকে পুরো গ্রামবাসী আতংক অবস্থায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাথে সাথে পুলিশ জনতা এগিয়ে আসায় তারা বড় ধরনের ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। যার ফলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

আর একজন প্রত্যক্ষদর্শী অংওয়াইচিং মার্মা ঐ সময় বৌদ্ধ ভিক্ষুর সাথে মন্দিরে অবস্থান করছিলেন। তিনি জানান, শুধুমাত্র দরজা জানালা ধাক্কার আওয়াজ কানে এসেছে। তবে দুর্বৃত্তদের দেখতে পায়নি। মাইকিং করার কারণে দুর্বৃত্তরা হয়ত পালিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, মন্দিরে বাহিরে পায়ের চিহ্ন ও পালিয়ে যাওয়ার সময় মন্দিরে ঘেড়া বেড়া ভাংচুর করে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলম ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাহাদুর ঘটনাস্থলে যান এবং গ্রাম বাসিকে আতংক না হওয়ার জন্য শান্তনা প্রদান করেন বলে জানান।

সরেজমিনে এই প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে গিয়ে মারমা পাড়া ঘুরে লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে নারী পুরুষ সকলেই আতংক অবস্থায় চোখের ঘুম হারাম করে লাঠি সোটা নিয়ে রাত জেগে পাহাড়া বসিয়েছে পুলিশের পাশাপাশি। তবে জনতার পাশাপাশি পুলিশ তহলও অব্যাহত রয়েছে।

বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রে ইনচার্জ আবু মুছা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান, সন্ত্রাসী ধরতে পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। অভিযানের মাধ্যমে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িতদের অবশ্যই খুঁজে বের করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। তাছাড়া অপরাধীদের কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন