ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৬৫, ১৭০০ বাড়ি পুড়ে ছাই

fec-image

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে সহিংসতার ঘটনায় ৬৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়া এ ঘটনায় আরও ২৩১ জন আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সহিংসতায় গত কয়েকদিনে ধর্মীয় স্থানসহ ১ হাজার ৭০০ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং গতকাল রাজ্যটির ইম্ফলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং রাজ্য সরকারকে এক সপ্তাহ পরে ত্রাণ ও পুনর্বাসনব্যবস্থা সম্পর্কে একটি হালনাগাদ প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে।

মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেন, ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও অন্তত ১০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ১ হাজার ৪১টি বন্দুকের মধ্যে ২১৪টি উদ্ধার করা হয়েছে।’ যারা বন্দুক ছিনতাই করেছেন তাদের এসব বন্দুক নিকটবর্তী থানায় ফিরিয়ে দিতে বলেছেন তিনি। তা না হলে ‘চিরুনি অভিযান’ চালানো হবে বলেও সতর্ক করেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মনিপুরে হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েকটি জেলায় কারফিউ জারির পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে সহিংসতাকারীদের ‘দেখামাত্র গুলি’র আদেশ জারি করা হয়েছিল।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং জানিয়েছেন, মণিপুরের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ২১৮টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

মনিপুর ভারতের প্রত্যন্ত উত্তর-পূর্বের একটি অঞ্চল। এই অঞ্চলে কয়েক দশক ধরে জাতিগত ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ লেগে আছে। উত্তর-পূর্বে কয়েক ডজন উপজাতি গোষ্ঠী ও ছোট গেরিলা বাহিনী রয়েছে। এদের দাবি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া পর্যন্ত।

১৯৫০-এর দশকের গোড়ার দিকে মনিপুরে প্রথম বিদ্রোহ শুরু হয়। এর পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সংঘাতে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তবে অনেক গোষ্ঠী দিল্লির সঙ্গে ক্ষমতার জন্য নানা চুক্তিতে আসার পর গত কয়েক বছরে এসব বিরোধ কমেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নিহত, ভারত, মণিপুর
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন