মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ২৯৬
আফ্রিকার মরক্কোয় আঘাত হেনেছে ৬.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। দেশটির স্বরাষ্টমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৯৬, চিকিৎসার জন্য ১৫০ জনের বেশি আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভূম্পিকম্পটিতে সবচেয়ে বেশি হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কেন্দ্রস্থলের দিকে। আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় চলে এসেছে মানুষ।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার কিছু পরে ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেশ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার (৪৪ মাইল) দূরে আটলাস পর্বতমালার ওকাইমেডিনের স্কি রিসোর্টের কাছে। ৫০০ বছরের মধ্যে ওই এলাকায় এত বড় ভূমিকম্প হয়নি।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছে পাহাড়ি এলাকার আস্নি গ্রামের বাসিন্দা মনতাসির ইত্রি জানান, সেখানকার বেশিরভাগ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের প্রতিবেশীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে ও নিজেদের সরঞ্জাম দিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে স্থানীয়রা।
আরও পশ্চিমে তারউদান্তের কাছে শিক্ষক হামিদ আফকার বলেন, তিনি তার বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছেন ও ভূমিকম্পের পরে আফটারশক হয়েছে। ভূমিকম্পটি প্রায় ২০ সেকেন্ড স্থায়ী হয় বলেও জানান তিনি।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের ফলে অনেক ভবনের দেয়াল ফেটে গেছে। এই কারণে ধুলোর মেঘ তৈরি হয়। সারারাত মানুষ রাস্তায় রাত কাটায়।
অন্যান্য পোস্টে দেখানো হয়েছে হতবাক বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য, স্থানীয় ভবনের বাইরে এবং রাস্তায় দৌড়াচ্ছে।
মারাকেশের একজন বাসিন্দা ব্রাহিম হিমি রয়টার্সকে বলেন, তিনি অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে শহরের ঐতিহাসিক পুরাতন শহর ছেড়ে যেতে দেখেছেন। তিনি আরও বলেন, মাটি কেঁপে ভবনের সম্মুখভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এসাওইরার এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা বলেন, খুব বেশি ক্ষতি হয়নি তবে লোকজন আতঙ্কিত। কম্পনের সময় আমরা চিৎকার শুনেছি। খবরে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে ভূমিকম্পগুলো অস্বাভাবিক তবে অপ্রত্যাশিত নয়। এই মাত্রার কোনো ভূমিকম্প ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলে দেখা যায়নি।
ইউএসজিএস বলেছে, ১৯০০ সাল থেকে এই ভূমিকম্পের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৭ মাত্রার চেয়ে বড় ভূমিকম্প দেখা যায়নি। তবে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
ইউএসজিএস ব্যাখ্যা করেছে যে, অ্যাটলাস পর্বতমালায় ‘তির্যক-বিপরীত ফল্টিং’ ভূমিকম্পের কারণ।
খবরে বলা হয়েছে ভূমিকম্পটি স্পেন ও পর্তুগালেও অনুভূত হয়েছে।