মাটিরাঙ্গার জলপাহাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের উল্লাস
মুজিবুর রহমান ভুইয়া :
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে ঘিরে শ্রাবণের বৃষ্টির তিন দিনের মিতালী শেষে মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকাল থেকে মাটিরাঙ্গার বিনোদনপ্রেমী মানুষের ঢল নামে বিনোদন কেন্দ্র জলপাহাড়ে। ঈদের দুইদিন বৃষ্টিসহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মানুষ যার যার ঘরে গৃহবন্দি থাকলেও মঙ্গলবার টিপটিপ বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই মানুষ ভীড় করে ঘরের কাছের একমাত্র বিনোদন পার্ক জলপাহাড়ে।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিকালে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরের বুকে পাহাড় আর জলের সমন্বয়ে গড়া জলপাহাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সীদের উপচেপড়া ভীড়। লোকে লোকারণ্য যেন জলপাহাড়। শিশুদের সঙ্গে বড়রাও যেন আনন্দে একাকার হয়ে গেছে। বেশিরভাগ লোকজনই ব্যস্ত ছিল ঘুরে-ফিরে ছবি তোলায়। বিভিন্ন পেশায় ব্যস্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে বাঁধভাঙা আনন্দে মেতেছে এখানকার শিশু-কিশোররা। ছোটদের আনন্দ ছুঁয়েছে বড়দেরও।
পাহাড়ীদের ঝুম ঘরের আদলে তৈরী দুটি ঘরেই লক্ষ্য করা গেছে বিনোদনকেন্দ্রে আসা লোকদের পারিবারিক আড্ডা। বিকালের আধা আলো আর আধা আঁধারে জলপাহাড়ের পাকা সিঁড়িতে ছিল কিশোর-কিশোরীদের জম্পেস আড্ডা। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও একটু বিনোদনের আশায় ছুটে আসা মানুষগুলোকে যেন ঘরে ফিরতে দিচ্ছেনা জলপাহাড়ের ছোট্ট ভালোবাসা।
জলপাহাড়ের বুকে ছোট্ট লেকে একমাত্র স্পীড বোটটি যেন বিনোদনপ্রেমীদের বাড়তি আনন্দের জায়গা। কেউ মা-বাবার হাত ধরে আর কেউ কেউ প্রিয়জনের হাত ধরে স্পীড বোটে চড়ে বেড়িয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে স্পীড বোটের সংখ্যা না বাড়ানোর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
চট্টগ্রাম থেকে স্বামীর সাথে সন্তান নিয়ে শশুরালয়ে ঈদ করতে আসা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, মাটিরাঙ্গায় মতো ছোট্ট শহরে এবার ঈদ করে মনে হয়েছে শহরেই ঈদ উদযাপন করলাম। বৃষ্টির কারণে প্রথম দু‘দিন ঘর থেকে বের হতে না পারলেও মঙ্গলবার বিকালে স্বামীসহ স্ব-পরিবারে জলপাহাড়ে এসেছেন বিনোদনের খোঁজে। তৃপ্ত জান্নাতুল ফেরদৌস জলপাহাড়ে বিনোদনের আরো সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি করেন। তিনি ঘরের কাছে বিনোদনের এতো বড় সুযোগকে মাটিরাঙ্গাবাসীর জন্য অনেক বড় পাওয়া বলেও দাবি করেন।
জলপাহাড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা অনেকেই বিনোদনের পরিধি বাড়ানোর আশা করে বলেন, আমরা নাড়ীর টানে বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে এখানে ছুটে এলেও বিনোদনের কোন সুযোগ ছিলনা। তবে জলপাহাড় আমাদের ব্যস্ত সময়ে বিনোদনলাভের সুযোগ করে দিয়েছে। তারা এজন্য জলপাহাড়ের স্বপ্নদ্রষ্টা মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকাউলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জলপাহাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের উপচেপড়া ভীড় তার নিজের চোখেই দেখা দরকার ছিল।
বিনোদনমূলক পার্ক জলপাহাড়ের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ জলপাহাড়কে পূর্ণাঙ্গ পর্যটন স্পটে পরিণত করা হলে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি মানটিরাঙ্গার মানুষ বিনোদনের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুটে যেতে হবেনা বলেও মনে করেন এখানকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
khub e valo, nice place