মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবীতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
মহেশখালীর মাতাবাড়িতে বাস্তবায়নাধীন দেশের বৃহত্তম কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবীতে মানববন্ধন করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় তারা এ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক নওশাদুল ইসলাম, যুগ্ন-আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ, মোজাম্মেল হক, জালাল আহামদ, আহমদ মিয়া, আব্দুল কাদের, সদস্য রুহুল আমিন, তাজেম উদ্দীন, মোঃ সেলিম, মোঃ মুছা, ছৈয়দ আকবর, ওসমান গণি, মনজুর, রফিক উদ্দীন, হারুনর রশিদ, জাকির ফকির, মোঃ নুর হোসেন, রশিদ, জাহাঙ্গীর আলম, রমজান আলী, মোক্তার আহমদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে শ্রমিকরা জানান, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলে লবণ, মৎস্য ও ধানের ৪০ হাজারের বেশী শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। এসব শ্রমিক বেকার হলে তাদের পরিবারের সদস্যসহ অন্তত ৩ লাখ মানুষ না খেয়ে মরবে। তাই সরকারের অন্যান্য খাতের মতো শ্রমিকদেরও ক্ষতিপূরণ দেয়া ও পুনর্বাসনের দাবী জানান তারা। মানববন্ধনে পুরুষ-নারী ও শিশুসহ ৫ হাজারের মতো মানুষ অংশ নেন। এসব মানুষ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কয়লা বিদ্যুৎ এলাকায় অবস্থান নেন। এসময় পুরো কয়লা বিদ্যুৎ এলাকায় অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে। দাবী আদায় না হলে তারা আগামী কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে হুঁশিয়ারী দেন।
জানা গেছে, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি, চাষ, জমি ও বসতবাড়িসহ অন্যান্য সব খাতে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কোন ধরণের ক্ষতিপূরণ বা অন্য কোন সুবিধা বা ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থা করেনি সরকার। তাই কিছু দিন আগে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শুরু হলে লবণ শ্রমিক, চিংড়ি শ্রমিক ও ধান চাষের শ্রমিকরা এক প্রকার বেকার হয়ে পড়ে। সামনে পুরোদমে কাজ শুরু হলে শ্রমিকরাও একেবারে বেকার হয়ে পড়বে। এ চিন্তায় ৪০ হাজার শ্রমিক এখন চরম দুঃচিন্তায় দিন অতিবাহিত করছেন।
পাশাপাশি স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক নওশাদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সব চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্রমিকরা। অন্যরা বিভিন্ন ভাবে মোটা অংকের ক্ষতি পূরণ পেয়ে অন্য খাতে বিনিয়োগ করে আরো সুন্দরভাবে জীবন ধারণ করতে পারবেন। কিন্তু কোন ধরণের ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় শ্রমিকদের যাওয়া কোন পথ খোলা নেই। তারা এখন কি খাবে, কোথায় যাবে; তাদের পরিবার-পরিজনের কি হবে কিছু জানে না।’
মোঃ মুছা বলেন, ‘মাতারবাড়িতে কয়লা বিদ্যুৎ এটা অত্যন্ত ভালো। কিন্তু এখানকার মানুষ ও এলাকার উন্নয়নের দিকেও সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। এর ধারবাহিকতায় প্রথমে শ্রমিকদের উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের পাশপাশি ও তাদের পুনর্বাসনেরও ব্যবস্থা করতে হবে।’