মাদ্রাসায় ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে খাগড়াছড়িতে শিক্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

fec-image

খাগড়াছড়ির একটি মাদ্রাসায় ছাত্রকে(১০) বলাৎকারের অভিযোগে দীঘিনালা উপজেলার ছোট মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. নোমান মিয়া ওরফে রোমান (২২)কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আদালত ভিকটিমের পরিবারকে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুরে খাগড়াছড়ির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুছাং আবু তাহের এই রায় প্রদান করেন। সাজাপ্রাপ্ত নোমান দীঘিনালার ছোট মেরুং এলাকার মো. আলী মিয়ার ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ছোট মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদ্রাসায় হাফেজ মো. নোমান মিয়া ওরফে রোমান(২২) একই মাদ্রাসার ছাত্র (১০)কে বলাৎকার করে। এই ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার একই বছরের ২৩ আগস্ট দীঘিনালা থানায় মামলা দায়ের করেন।

মো. রফিকুল ইসলাম মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, তার ১০ বছরের ছেলে ফরহাদ মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদ্রাসার ছাত্র। সে মাদ্রাসায় অবস্থান করেই হেফজ বিভাগে পড়াশুনা করতো। গত রমজান মাসে রাতের বেলা হাফেজ আল নোমানের শয়নকক্ষে নিয়ে ওই ছাত্রকে দিয়ে হাত, পা এবং শরীর মেসেজ (টিপাইত) করাতো। এক পর্যায়ে মাদ্রাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়লে ছাত্রকে জোড়পূর্বক বলৎকার করে। সে থেকে শিক্ষক নোমান বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বিভিন্ন অজুহাতে ফরহাদকে মারধর করতো।

ঘটনাটি ফরহাদ তার নানীকে জানানো হলে ফরহাদের নানী মাদ্রাসার তত্তাবধায়ক হাফেজ মোহাম্মদ শরীফুল ইসলামকে জানালে তিনি বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। সে থেকে শিক্ষক নোমান নানা অজুহাতে ফরহাদের উপর শারীরিক নির্যাতন বাড়িয়ে দেন। এক পর্যায়ে ফরহাদ অসুস্থ হয়ে পড়ে।

মামলা দায়ের পর ২০১৮ সালের ২২ মে চার্জ গঠন করা হয়। মামলা চলাকালীন মোট ১২ জন স্বাক্ষ্য প্রদান, যুক্তি তর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় প্রদান করেন। আসামীকে সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ভিকটিমের পরিবারকে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ারও নির্দেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইজীবি এডভোকেট বিধান কানুনগো সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, এমন রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন