মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীর সংখ্যা বেড়ে ৯৫, কমেছে গোলাগুলির শব্দ

fec-image

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমার অভ্যন্তরে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সংঘাতে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ জন।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮ টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২ টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্য সংখ্যা জানানো হয়েছিল ৬৮ জন। সোমবার সকালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫ জনে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিজিপির ৬৮ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জনের বেশী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এছাড়া রোববার থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত নতুন করে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৭ জনের কতজন আহত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

শরিফুল ইসলাম বলেন, রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিনভর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে গোলাগুলি অব্যাহত ছিল। এতে সংঘর্ষের জেরে রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পরে তারা বিজিপির কাছে আশ্রয় চাইলে হেফাজতে নেয়।

বিজিবি তাদেরকে (বিজিপি) নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে। বিজিপির আহত সদস্যের চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির দুই সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিজিপির চিকিৎসাধীন ওই দুই সদস্য হলেন- রি লি থাইন (২২) ও জা নি মং (৩০)।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে আহত অবস্থায় বিদ্রোহী আরাকান আর্মির ছয় সদস্যকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা দুপুর সাড়ে ১২টায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবেশ করেন।

আহতরা রাখাইন রাজ্যের বুচিডং, টাংগো এবং ম্রাউ এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে দুজনের বয়স ২৪, দুজনের ২৩, একজনের ২০ এবং বাকি একজনের ২২ বছর বলে জানা গেছে।

তবে কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কায়সার হামিদ রাতে বলেন, এ ধরনের কোনো খবর তাদের কাছে নেই। তিনি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

অন্যদিকে রোববার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত ২টা পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়েনের ধামনখালী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরের ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে সকাল থেকে গোলগুলির আর কোন শব্দ শোনা যায়নি। পালংখালীর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সীমান্তে তার এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। সকালে নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও মানুষের মাঝে এখনো আতঙ্ক কাটেনি।

তবে সোমবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে ২/৩ টির গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার, সীমান্তরক্ষী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন