ম্রোদের জুমের শস্যপূজা উৎসব ‘চাময়’ উদযাপন

fec-image

পার্বত্যাঞ্চল বান্দরবানের সংখ্যায় দ্বিতীয়তম জনগোষ্ঠী ম্রো সম্প্রদায়ের বসবাস। জনসংখ্যা প্রায় এক লাখের বেশী। বসবাস করেন থানচি, রুমা, আলীকদম ও চিম্বুকসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায়। জীবিকা নির্বাহ হিসেবে তাদের কাছে প্রধান হল জুম ও বিভিন্ন ফলাদি চাষ। জুম চাষ করে সারাবছর চলে তাদের সংসার। জুমের নতুন ফসল কিংবা নবান্নকে ম্রো ভাষায় বলা হয় ‘চাময়’। জুম থেকে যেসব নতুন ফসল উৎপাদিত হয় সেসব খাদ্য শস্যকে পাড়াবাসী মিলে জুম দেবতাদের মাঝে উৎর্সগ করা হয়। তাদের যুগেযুগ ধরে সরক্ষণ করে রাখা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলতে শস্যপূজা উৎসব ‘চাময়’ উদযাপন করেছে ম্রো সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে চিম্বুক সড়কের ম্রোলং পাড়া এলাকার মাঠ প্রাঙ্গণে ম্রো’দের জুমের উৎপাদিত খাদ্যকে শস্যপূজা উৎসব ‘চাময়’ উদযাপন করেছে সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা।

এর আগে ম্রোলং পাড়া থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার শুরু হয়। এতে অংশ নেন ম্রোলং পাড়া,বসন্ত পাড়া, নোয়াপাড়াসহ তিন পাড়া গ্রামের ৫০০টি পরিবার।নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য পোশাক পরিধান করে উৎসবের শোভযাত্রা যোগ দেন নারী-পুরুষ। পরে ম্রোদের তৈরীকৃত বিভিন্ন রকমের তৈরি পিঠা উপস্থাপন করা হয়। সভার আগে ম্রোদের ঐতিহ্যবাহী প্রুং পে প্রুং সুরের নৃত্য পরিবেশ করেন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা।

অনুষ্ঠান আয়োজন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সহযোগিতা ছিলেন বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ইনষ্টিটিউব।

বান্দরবানে জেলা পরিষদের সদস্য সিয়ং খুমী সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো: আতাউর রহমান।

বক্তব্যে প্রধান অতিথি মো: আতাউর রহমান বলেন, পার্বত্যঞ্চলসহ পুরো বাংলাদেশে প্রায় ৫০টি জাতিগোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে। সেসব ভাষাকে এক কাতারে আনার জন্য বর্তমান সরকার বড় পরিসরে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করেছেন। তাছাড়া প্রত্যেকটি পার্বত্যঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখার ও সেগুলো তুলে ধরে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে তাদের ভাষা তুলে ধরার জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আমরা মনে করি সংস্কৃতি আর আর ভাষা তুলে ধরার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটের পরিচালক মংনুচিং মারমা, গবেষণা কর্মকর্তা ক্যা ওয়াই ম্রো, ত্রিপুরা পরিচালক গাব্রিয়াল ত্রিপুরাসহ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন