রক্ত-বন্যায় ভাসছে মিশর; সেনা অভিযানে নিহত ২২০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিশরের রাজধানী কায়রোয় আজ দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ভয়াবহ অভিযান চালিয়েছে। তবে, হতাহতের বিষয়ে নানামুখী খবর পাওয়া গেছে। কোনো কোনো মাধ্যমে বলা হয়েছে নিহতের সংখ্যা দু’হাজার ছাড়িয়ে। আবার কোনো কোনো মাধ্যম জানিয়েছে নিহত হয়েছে অন্তত আটশ’ মানুষ। তবে, মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে সামরিক অভিযানে নিহত হয়েছে মাত্র ৫৬ জন। অভিযানে আহত হয় ১০,০০০ মানুষ।
মিশরের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল ইখওয়ানুল মুসলিমিন বলেছে- উচ্ছেদের নামে নিরাপত্তা বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে। এর আগে, সরকারি বিবৃতিতে দাবি করা হয়- উচ্ছেদ অভিযানের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছে।
বুলডোজার নিয়ে আজ খুব ভোরে রাজধানী কায়রোর দু’টি স্থানে অবস্থানরত মুরসির সমর্থকদের উচ্ছেদ শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। গত ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে উতখাতের পর থেকে নাহ্দা চত্বর এবং নাসের সিটির রাব্বা আদাভিয়ায় অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু হয়। মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে আবার ক্ষমতায় বহালের দাবি করছে তারা।
রাজধানী কায়রোর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নাহ্দা চত্বরের সমাবেশ তুলনামূলকভাবে ছোট ছিল এবং এরইমধ্যে তা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ওই এলাকায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। বিক্ষোভকারীদের শিবির উতখাতের জন্য বুলডোজার ব্যবহার করা হয়েছে বলে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
নাসের সিটির রাব্বা আদাভিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঢোকার দাবি করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দু’টি অবস্থানের ওপর বৃষ্টির মতো কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়া হয়েছে। রাব্বা আদাভিয়ার অবস্থান কর্মসূচির মঞ্চে নেতাদেরকে গ্যাস মাস্ক পরে অনড়ভাবে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া, কাঁদানে গ্যাসের ধোয়ায় আচ্ছন্ন এলাকাটিতে সাধারণ মাস্ক পরা বিক্ষোভকারীরাও অনড় রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের ভাষায় বিক্ষোভাকারীরা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণ করলে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তবে কেউ যদি ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে চায় তবে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
এদিকে, নিরাপত্তা বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে ইখওয়ানুল মুসলিমিন মিশরের জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছে। ইখওয়ানের মুখপাত্র গেহাদ আল-হাদ্দাদ টুইটারে দেয়া বার্তায় বলেছে, জনগণকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে না বরং সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী সব কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়ার একটি রক্তক্ষয়ী চেষ্টা চলছে।
সূত্র- রেডিও তেহরান