রাঙামাটিতে গণধর্ষণের ঘটনায় ৩দিন পার হলেও মূল আসামীরা ধরাছোয়ার বাইরে

kk

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
চট্টগ্রাম থেকে নব বিবাহিত দম্পতি পর্যটন শহর রাঙামাটিতে বেড়াতে এসে হোটেল ম্যানেজারসহ সাত নরপিশাচ কর্তৃক বেদম মারধর ও গণধর্ষণের ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও ঘটনার মূল আসামীরা এখনো রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হোটেলে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে খাবার হোটেল আল মক্কা’র মালিক রফিককে আটক করা ছাড়া কার্যত আর কোনো অগ্রগতি সাধিত হয়নি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায়। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি নাই। আসামীদের গ্রেফতারে অনেকটা এগিয়েছে পুলিশ।

নির্মম এই ঘটনার শিকার নববধূ (২০) রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে গাইনী বিভাগের বেডে শুয়ে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা উল্লেখ করে কান্নাজড়িত কন্ঠে জানায়, ভাই আমি স্বামীকে নিয়ে বড় আশা করে পর্যটন শহর রাঙামাটিতে এসেছিলাম, আমাদের নিজেদের পছন্দে পরিবারের অমতে একই সূতায় গাথাঁ বিবাহিত জীবনকে একটু উপভোগ করার আশায়। কিন্তু একদল হায়েনা-নরপিশাচ আমার জীবনটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। “আমি কি নিয়ে বাচঁবো” বলে হাউমাউ করে কেদেঁ উঠেন নির্মমভাবে মারধর ও গণধর্ষণের শিকার নববধূ।

এদিকে এই নির্মম ঘটনায় মাথায় ও সারা দেহে লোহার হাতুরির মাধ্যমে থেতলে যাওয়া শরীর নিয়ে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বেডে শুয়ে থাকা সাইফুদ্দিন রিটন জানালেন, ভাই আমরা কি করবো, এখানে আমাদের কোনো আপনজন নেই, একমাত্র আল্লাহ ও আপনারা যারা আছেন আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আমি কিইবা করতে পারি। পুলিশের পরামর্শে আমি বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছি। নিয়মিতভাবে পুলিশ আমাদের সাথে যোগাযোগ করছে।

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে দেখা করতে গেলে, ঘটনার শিকার পর্যটক দম্পতি, তিনদিনেও পুলিশ কর্তৃক একমাত্র রফিক ছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমাদের মনে হচ্ছে আসামীদের পক্ষ থেকে কোনো প্রভাবশালী মহল ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে রাঙামাটি কোতয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আশরাফুল ইসলাম জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।

অন্যদিকে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় গিয়ে দেখা গেছে আসামীদের পক্ষে তদবির করার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল থানার সামনে নিয়মিত অবস্থান করছে ও পুলিশের গতিবিধি আসামীদের কাছে নিয়মিতভাবে পাচার করছে। যার ফলশ্র“তিতে আসামীরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে বিধায় আসামীদের অবস্থান নির্ণয় করে তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশ ব্যর্থ হচ্ছে।

এছাড়া পুলিশের কয়েকজন অফিসারে সাথে তাদের সখ্যতাও রয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন শহর রাঙামাটি ঘুরতে এসে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শহরের রিজার্ভ বাজারস্থ হোটেল পাহাড়িকায় হোটেল ম্যানেজার আশুসহ সাত নরপশু কর্তৃক বেদম মারধরের পাশাপাশি গণধর্ষণের শিকার হয়েছে আগত পর্যটক দম্পতি। এই ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে খাবার হোটেল আল মক্কার মালিক ধর্ষক রফিককে আটক করতে সক্ষম হলেও বাকি ছয় আসামীকে ঘটনার তিন দিন পরেও আইনের আওতায় আনতে পারেনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন