রাঙামাটিতে দোলযাত্রা উৎসব পালিত
হোলি মানেই রঙের খেলা, দোলযাত্রা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তো উৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যান্য দেশের ন্যায় রাঙামাটির বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে বৃহস্পতিবার দোলযাত্রা (হোলি) উৎসবটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে।
রাঙামাটিতে দোলযাত্রা উৎসবের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দিক রয়েছে বলে সকল ধর্মের মানুষ এ উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। আবির ও গুলাল নিয়ে রং খেলায় মেতে উঠে অনেক শিশু-কিশোর তরুণ-তরুণী। রঙে রঙে ভরে গেছে রাস্তাঘাঠ, এমনকি প্রিয় পোশা-পাখিও বাদ যায় নি।
দিনব্যাপী ছোটরা বয়স্কদের পায়ে ও কপালে আবির মেখে আশির্বাদ কামনা করেন। তেমনি বয়স্করা আর্শিবাদ করেন ছোটদের। দোলযাত্রা উৎসবটি উপলক্ষ্যে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন মঠ মন্দিরে চলে রাঁধা কৃষ্ণের দোলযাত্রা, কীর্তন ও মহোৎসব।
উল্লেখ, বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির ও গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সহিত রঙ খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাঁধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নান করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তোরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রঙ খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।
শান্তি নিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে। দোলের পূর্বদিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বহ্ন্যুৎসব হোলিকাদহন বা নেড়াপোড়া নামে পরিচিত। উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়।