রাঙামাটি রাজবন বিহারে দু’দিনব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হচ্ছে ১৯ নভেম্বর

Rangamati Pic-2-Bihar-2

স্টাফ রিপোর্টার : 

আগামী ১৯ নভেম্বর শুরু হচ্ছে রাঙামাটি রাজবন বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দানোৎসব। দু’দিনব্যাপী এ উৎসব উপলক্ষে শুরু হয়েছে নানা প্রস্তুতি। প্রায় আড়াই হাজার বছরেরও আগে তথাগত গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহাপুণ্যবতী বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে রাজবন বিহারে এবার ৪৩তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই বিভিন্ন আয়োজন সম্পন্নে ব্যস্ত সময় কাটাছে রাঙামাটি রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদ। গ্রহণ করা হয়েছে উৎসবের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

উৎসবে বসবে মেলা। এছাড়া রয়েছে ধর্মীয় কীর্তন, নাটক, চরকায় সুতা কাটা, বেইন বুনন, কল্পতরু শোভা যাত্রাসহ বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন। কঠিন চীবর দানোৎসবে প্রতি বছর রাঙামাটি রাজবন বিহারে অগণিত মানুষের ঢল নামে। সমাগম ঘটে লাখো মানুষের। অন্যদিকে শুরু হয়েছে পাহাড়ের বিভিন্ন ছোট ছোট বিহারে চীবর দান উৎসব। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে মুখর হয়ে উঠেছে পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটি।

চরকায় সুতা কাটার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে দুই দিনের উৎসব। ২৪ ঘন্টার মধ্যে তৈরি করা চীবর উৎসর্গের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ মহাপুণ্যযজ্ঞ। দু’দিনব্যাপী উৎসবে পঞ্চশীল গ্রহণ, রাতে সুতা লাঙানো, সিদ্ধ ও রংকরণ, বেইন বোনা, ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, বুদ্ধপূজা, সংঘদান, ভিক্ষুসংঘের পিন্ডদান, চীবর ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, কঠিন চীবর উৎসর্গ, সদ্ধর্ম দেশনা, সার্বজনিন প্রদীপ পূজাসহ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাঙমাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা বলেন, আসন্ন ১৯ নভেম্বর রাঙামাটি রাজ বনবিহারে কঠিন চীবর দান উৎসব উপলক্ষে আগত পূর্ণার্থীদের সুবিধার্থে আইন শৃংখলা বাহিনীকে সড়ক ও নৌ পথের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রয়োজন অনুযায়ী টহল ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেক করা, যানজট নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ট্রাফিক মোতায়েন, সমগ্র এলাকায় আইনশৃংখলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, স্বাস্থ্য বিভাগকে মেডিকেল টিম ও এম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা, সুষ্ঠুভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত ও পানি সরবরাহের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কেবলই বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি রাজবন বিহারসহ শাখা বন বিহারগুলো ছাড়া বিশ্বের কোথাও বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কঠিন চীবর দানোৎসবের আয়োজন হয় না। মহামতি গৌতম বুদ্ধের প্রধান সেবিকা মহাপূণ্যবতী বিশাখা ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা কেটে রংকরণ, বয়ন ও সেলাই শেষে চীবর (বৌদ্ধভিক্ষুদের ব্যবহার্য ও পরিধেয় বস্ত্র) দানকার্য সম্পাদন করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন