রাঙামাটি সফরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রতিনিধি দল

fec-image

রাঙামাটিতে দু’দিনের সফরে এসেছেন চার দেশের রাষ্ট্রদূতসহ আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থার প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে তারা সফরে আসেন।

এতে জাতিসংঘের উন্নয়ন কার্যক্রমে সক্ষমতা বৃদ্ধি, ভবিষ্যতে উন্নয়ন কার্যক্রম অগ্রাধিকার বিষয়ে আগ্রহ জানতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রাঙামাটিতে সফরের প্রথম দিনে প্রতিনিধি দলটি সকালের দিকে পৃথক ভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সাথে নিজ কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি ষ্টিফেন লিলার। এসময় প্রতিনিধি দলটি প্রতিনিধি দল সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি ছাড়াও পার্বত্য চুক্তির আলোকে গঠিত পরিষদগুলো এখানে কিভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করে এবং এখানকার মানুষ কীভাবে তাদের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেছে এ সম্পর্কে জানতে চান।

এসময় প্রতিনিধি দলকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি পর্যটন সম্ভাবনাময় অঞ্চল। বিশেষ করে রাঙামাটির কাপ্তাই লেককে কেন্দ্র করে যদি পর্যটন উন্নয়ন করা যায় তাহলে লেক নির্ভর এখান বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ উপকৃত হবে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আওতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান শীর্ষক প্রকল্পটি ইউনিসেফের সহায়তায় চলমান রয়েছে, যা আগামী বছর ৩০ জুন শেষ হবে। প্রকল্পটি সমাপ্ত হওয়ার পর যাতে অব্যাহত থাকে তার জন্য ইউনিসেফের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।

অপরদিকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের অংশ হিসাবে পার্বত্য চুক্তি সই হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, ভারত প্রত্যাগত এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে টাস্কফোর্স এবং ভূমি সমস্যা সমাধানে ভূমি কমিশন সৃষ্টি হয়েছে। পার্বত্য চুক্তির পরবর্তী বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চুক্তির পর ইউএনডিপির মাধ্যমে বিদেশী দাতাদের সহায়তায় পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল জাতীয়করণ, ম্যালেরিয়া নির্মূলকরণ এবং কৃষিক্ষেত্রে সাফল্য আত্বসামাজিক উন্নয়নসহ নারীশিক্ষা উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দাতা সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।

প্রতিনিধি দলটিতে রয়েছেন- নরওয়ে রাষ্ট্রদূত এইট ই স্পেন রিক্টার ভেন্ডসন, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার, ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি ক্রিস্টিন ব্লুখুশ, ফাও কান্ট্রি প্রতিনিধি রোবার্ট সিমসন, ইউনিসেফ কান্ট্রি প্রতিনিধি সোলডন ইয়েট, ইইউ ডেলিগেশন প্রধান এইট ই চার্লস, ইউকে হাই কমিশনার এইট ই রোবার্ট চ্যাটরন ডিক্সন ও ইউএন আবাসিক সমন্বয়কারী গায়েন লিওস।

সাক্ষাত সময়ে জেলা পরিষদের সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, ঝর্না খীসা, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম ও নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মো. শিবলী নোমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিনিধি দলটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সাথে সাক্ষাত ছাড়াও স্থানীয় নারী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। বুধবার (১৬ নভেম্বর) দাতা সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত প্রত্যন্ত জুরাছড়ি উপজেলার গ্রামীণ সাধারণ বন (ভিসিএফ) পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: রাঙামাটি, রাষ্ট্রদূত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন