রাজস্থলীতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী পালন ও সেলাই মেশিন বিতরণ

fec-image

বঙ্গমাতার রেখে যাওয়া আদর্শকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্ম দেশমাতৃকার কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করার আহবান জানিয়েছেন রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমা।

সোমবার (৮ আগস্ট) সকাল ১০ টায় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা স্মৃতি চাকমার সঞ্চালনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তনু কুমার দাশের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমা।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই মহীয়সী নারীর চিরঅম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। বঙ্গমাতার এবারের জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা, অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা’ অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত নম্র, শান্ত ও অসীম ধৈর্য্যের প্রতিমূর্তি। তিনি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য্য ও সাহস নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেন। তিনি আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।, বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল জাতির পিতার সহধর্মিনীই ছিলেন না, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত। দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলোতে ছিলেন দৃঢ় ও অবিচল। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। তারই পরামর্শে বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত অলিখিত এ ভাষণ প্রদান করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি অবস্থায় পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সাথে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।

চেয়ারম্যান আরো বলেন, বঙ্গমাতা প্রধানমন্ত্রীর পত্নী হয়েও সবসময় সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। নির্লোভ, পরোপকারী ও নিরহংকার মুজিবপত্নীর মাঝে বাঙালি মায়ের চিরন্তন প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ক্ষমতার চূড়ায় থেকেও তিনি অমায়িক ও আন্তরিক ব্যবহারে সবাইকে আপন করে নিয়েছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নিজ জীবনে লালন ও ধারণ করে তার সন্তানদেরকেও একই আদর্শে গড়ে তোলেন। তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই শিক্ষা, আদর্শ ও চেতনাকে অবলম্বন করে বাংলাদেশকে আজ বিশ্বের বিস্ময়, উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সাথে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহিদ হন। জাতির ইতিহাসে যা এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে না থাকলেও তার রেখে যাওয়া আদর্শকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্ম দেশমাতৃকার কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখবেন বলে মন্তব্য করেন। এ সময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা, থানা অফিসার ইনচার্জ জাকির হোসেন, ১ নং ঘিলাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা, সাংবাদিক আজগর আলী খানসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক ও উপকার ভোগীগণ। পরে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক ৬ জন মহিলাকে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। এইছাড়া ৩ জন অসহায় ও দুস্থ মহিলাকে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করে মোবাইল ব্যাংকিং উপাই এর মাধ্যমে মোট ৬ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জন্মবার্ষিকী, রাজস্থলী, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন