রামগড়ে আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব

fec-image

খাগড়াছড়ির রামগড়ে মাস্টারপাড়া আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় মর্যাদা ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে কঠিন চীবর দানোৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বি চাকমা ও মারমা এবং বাঙ্গালী বড়ুয়া সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছরই নানা আয়োজনে উদযাপিত হয় কঠিন চীবর দানোৎসব ।

বৌদ্ধ ধর্মগুরুদের(ভান্তে) পরিধানের কাপড় দান করাই এ উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। মারমা ভাষায় কাপড়কে চীবর বলা হয়। এক সময় ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা দিয়ে সুতা তৈরি করে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে ধর্মগুরুদের দান করা হত। কাজটি অতি কষ্টকর বিধায় একে কঠিন চীবর বলা হয়। অবশ্য এখন বাজার হতে ক্রয় করেই তা দান করা হয়।

রামগড় পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত মাস্টারপাড়া আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে শুক্রবার (৬ নভেম্বর) ভোর থেকেই শুরু হয় কঠিন চীবর দানোৎসবের কর্মসূচি। ভোরে বিহার প্রাঙ্গনে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে নানা কর্মসূচির সুচনা হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় হয় পিন্ডদান, ৭টা হতে ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চশীল প্রার্থনা। সকাল ৯টা হতে ১১টা পর্যন্ত চলে উৎসবে মূল পর্ব চীবর দান। বেলা ২টা হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় দেশনা। সন্ধ্যার পর উড়ানো হয় ফানুসবাতি।

মাস্টারপাড়া আনন্দ বৌদ্ধ বিহারের এ চীবর দানোৎসবে সভাপতিত্ব করেন রামগড়ের মহামুনি বৌদ্ধ বিহারের প্রধান ভান্তে উসোভনা মহাথেরো। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মারমা উন্নয়ন সংসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মংপ্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মংশেপ্রু চৌধুরী অপু, রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কার্বারী, রামগড় পৌরসভার নারী কাউন্সিলর কনিকা বড়ুয়া, গুইমারার হাফছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী প্রমুখ।

চীবর দানোৎসবে চট্টগ্রামের মীরেরসরাইর মায়ানী সুদর্শন বৌদ্ধ বিহারের ভান্তে প্রিয়ানন্দ মহাথেরোসহ খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বনভান্তেগণ অংশগ্রহণ করেন। চীবর দানোৎসবে অসংখ্য দায়ক- দায়িকা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কঠিন চীবর দানোৎসব, রামগড়ে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন