রামুতে দুটি বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, আ’লীগ নেতা গুলিবিদ্ধ

ramu pic dakati 2

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের রামুতে দুটি বসত বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতের গুলিতে গুরতর আহত হয়েছেন রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য নূর হোসেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সোমবার সকালে বিমানযোগে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।

গতকাল রবিবার দিবাগত রাত দুইটায় রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি চা বাগান এলাকায় এবং রাত আড়াইটায় ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের পূর্ব মেরংলোয়া গ্রামে এসব ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পৃথক ডাকাতির ঘটনায় ৬ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে জানা গেছে। ডাকাতদলের প্রহারে স্কুল ছাত্রীসহ আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন।

পূর্ব মেরংলোয়া গ্রামের মৃত আহমদ হোছাইনের ছেলে বেদারুল আলম জানিয়েছেন, ডাকাতদল বাড়ির পেছনে রান্নাঘর এবং পাকা ঘরের দুটি দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে বাড়ির সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় ডাকাতদল বাড়ির আসবাবপত্র তচনছ করে ৫ ভরি স্বর্ণের অলংকার, নগদ টাকা ও ২টি মোবাইল ফোন সেটসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। ডাকাতি চলাকালে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে ডাকাতদল পাশের আরো একটি বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা শুরু করে। এ সময় রাস্তায় ডাকাত প্রতিরোধে এগিয়ে আসা আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে দেখার পর তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ডাকাতদল। এতে চোখসহ মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে পড়ে যান নূর হোসেন।

পরে ডাকাতদল চলে গেলে স্থানীয় লোকজন নূর হোসেনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল এবং সোমবার সকালে বিমানযোগে ঢাকায় নেয়া হয়। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। খবর পেয়ে রামু থানা পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে যান। জানা গেছে, ওই বাড়ির সদস্য দুবাই প্রবাসী মোরশেদুল আলম সম্প্রতি বাড়িতে এসেছেন।

এ ঘটনার পূর্বে (রাত ২ টা) রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি চা বাগান এলাকায় সৌদি প্রবাসী মৌলভী কলিম উল্লাহর বাড়িতে হানা দেয় ডাকাতদল। গৃহকর্তার বড় ছেলে শাখাওয়াত হোসেন জানান, বাড়ির দুটি দরজা ভেঙ্গে ডাকাতদল ভিতরে প্রবেশ করে। ৭ জন ডাকাত তার শয়নকক্ষে গিয়ে চারটি অস্ত্র নিয়ে তাকে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় অন্যান্য ডাকাতরা বাড়ির সবকটি কক্ষে আসবাবপত্র তচনছ করে ৪ ভরি স্বর্ণের অলংকার, ২৫ হাজার নগদ টাকা ও ৩টি মোবাইল ফোন সেটসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। এ সময় চিৎকার করায় তার ছোট বোন জায়নুব ছিদ্দিকাকে মারধর করে ডাকাতরা।

শাখাওয়াত হোসেন জানান, ডাকাতির পর তিনি রামু থানায় একাধিকবার কল করেন। কিন্তু পুলিশ তা রিসিভ করেনি। এমনকি সোমবার বেলা ১২ টা পর্যন্তও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি।

রামু থানার ওসি (তদন্ত) শেখ আশরাফুজ্জামান জানিয়েছেন, এসব ডাকাতি নয়, ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে। এরপরও এসব ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে।

পূর্ব মেরংলোয়া এলাকার ব্যবসায়ি মোহাম্মদ হোসাইন জানিয়েছেন, কয়েকমাস আগেও এ এলাকায় ডাকাতি হয়েছে। অথচ পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। একেরপর এক ডাকাতির ঘটনায় ওই এলাকার লোকজন বর্তমানে চরম আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন