রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা জানাল সু চি!

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

বার্মার রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংসান সু চি আকষ্মিক আরাকান পরিদর্শনে যান আজ সকালে। সিত্তুয়ে বিমান বন্দরে অবতরণ করে হ্যালিকপ্টারযোগে মংডু যান তিনি।  দক্ষিণ মংডুর নলবনিয়ায় পূর্বে বাছায়কৃত কিছু রোহিঙ্গার সাথে মতবিনিময় করেন সু চি। এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য বসতঘর ( আশ্রয় কেন্দ্র) নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান।

১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী সুচিকে গৃহবন্দি করে ক্ষমতায় আরোহন করে জান্তা । সে থেকে বিগত ২৭ বছর পর আরাকানে পা রাখেন অংসান কন্যা। অবশ্য এর আগে ২০১০ সালে বন্দি জীবন থেকে মুক্ত হন তিনি । এরপর ২০১৫ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে পূণরায় ক্ষমতা ফিরে পান। কিন্তু সেনা শক্তিপূর্ণ বার্মার আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর লোমহর্ষক নির্যাতন চললেও নীরব থাকেন সু চি। এ নিয়ে সারাবিশ্বে নায়িকা থেকে খলনায়িকায় পরিণত হন সু চি।

রোহিঙ্গাদের সাথে মতবিনিময়কালে সু চি বলেন, “আমি তোমাদের জন্য বসতঘর (আশ্রয় কেন্দ্র) নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করতে এসেছি।”

তিনি ঘর নির্মাণের নকশা প্রণয়নকারী এক নারীকে দেখিয়ে দিয়ে বলেন, “কিভাবে ঘর নির্মাণ করা হবে, তার নকশা এর কাছে রয়েছে। তোমরা চাইলে তার সাথে বসে নকশায় পরিবর্তন আনতে পার।”

সু চি বলেন, “বসতঘর নির্মাণে গ্রামবাসীরা মিলে সহযোগিতা করলে সাফল্য অর্জিত হবে।” তিনি আরো বলেন, “শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে  সরকার। তাই সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

এসময় অংসান সু চি উপস্থিত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে হেসে হেসে বলেন, “ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা করাতে হবে। আশ্রয় কেন্দ্রে শিশুদের লেখা-পড়ার ব্যবস্থাও থাকবে”।

১৫ মিনিটের এ বৈঠকে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে কিছুই শুনতে চাননি তিনি। এরপর নলবনিয়া গ্রামের আশে-পাশে সেনাদের দেয়া আগুনে ভষ্মিভুত কিছু গ্রাম পরিদর্শন করে আকিয়াবের উদ্দেশ্যে মংডু ছেড়ে যান।

পূর্ব ঘোষণা ছাড়া সু চি’র এ সফর নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে  রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া ছাড়া উপায় দেখছেনা বার্মা সরকার। তাই এ চাপকে নমনীয় করতে আরাকান ভিজিট করেছেন সু চি।  রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পবন্দি করে রাখতে দ্রুত গতিতে ক্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু করতে চাইছে বার্মা।

বিশ্লেষকরা আরো জানান, রোহিঙ্গাদের নাগরিকেত্বর প্রশ্নে বাংলাদেশের সাথে একমত হতে পারছেনা বার্মা। বাংলাদেশ চাইছে, নব্বইয়ের দশকের শুরুতে করা দুই দেশের প্রত্যাবাসন নীতিতে পরিবর্তন এনে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে আরাকানে ফেরত পাঠাতে। কিন্তু বার্মা চাইছে প্রত্যাবাসন নীতি অপরিবর্তনীয় রেখে রোহিঙ্গাদের নাগরিকেত্বর বিষয়টি এড়িয়ে যেতে।

 

সূত্র: Arakan Television

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন