রোয়াংছড়ি কলেজ উদ্বোধন

Rowangchari pic 12.07

রোয়াংছড়ি প্রতিনিধি:

রোয়াংছড়ি উপজেলায় সদ্য স্থাপিত রোয়াংছড়ি কলেজকে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টার এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে উপজেলা পরিষদ হল রুমে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, হেডম্যান, কারবারী ও গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ বৃন্দে সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রোয়াংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান চহ্লামং মারমা সভায় সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন (ইউএনও)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জেলা আ.লীগসহ সভাপতি একে এম জাহাঙ্গীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা, জেলা আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও পরিষদ সদস্য ক্যসাপ্রু মারমা, উপজেলা আ.লীগ ও জেলা পরিষদ সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, জেলা পরিষদ সদস্য ফিলিপ ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ সদস্য ম্রাসা খেয়াং, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাউসাং মারমা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যন, সাংবাদিক, হেডম্যান, মেম্বার উপজেলা প্রশাসনে সকল দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারিসহ এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ, জেলা উপজেলা আ.লীগ সহযোগী সংগঠনে নেতৃ বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় সভায় বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান ক্যসাইনু মারমা,হেডম্যান সংগঠনে সাধারণ সম্পাদক উনিংহ্লা মারমা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পুলুপ্রু মারমা, আলেক্ষ্যং ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা, কারবারী সংগঠনে সভাপতি আথুইমং মারমাসহ আরো অনেকে। বক্তারা বলেন রোয়াছড়ি উপজেলাটি বান্দরবান জেলা সদরে খুব নিকটতম উপজেলায়। তার মধ্যে কাছে হলেও দুর্গম হওয়ায় শিক্ষা সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাহাড়ী এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ও দারিদ্র ছাত্র ছাত্রীরা জ্ঞানার্জনে সুযোগ পাওয়ার লক্ষ্যে মানসন্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন করা এ কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেছে। এ কলেজটি স্থাপনের জন্য রোয়াংছড়ি সদর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অংশৈমং মারমা ভূমি দান করেছে। এলাকার নিকটস্থ তাইম্রং ছড়া সড়কে অবস্থিত কলেজটি পাহাড়ী অধুষিত স্থান এ রোয়াংছড়ি উপজেলায়। পার্বত্যাঞ্চলে উচ্চশিক্ষা মাননোয়নের অনেকদিনে পালিত স্বপ্ন নিয়ে গড়ার এশিক্ষা প্রতিস্থান। এলাকার সমাজ সেবক ও সচেতন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে শিক্ষা বঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা সুযোগ ও প্রসার হবে বলে মনে করেন সচেতনমলে। এ অঞ্চলে বসবাসরত দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে জাতীয় আর্ন্তজাতিক মান শিক্ষা লাভ করতে পারবে বলে মনে করেন বক্তারা। হেডম্যান উনিংহ্লা মারমা বলেন বর্তমার নৈরাজ কতায় পরিস্থিতি নিয়ে পাহাড়ী এলাকার বসবাসকারিদের অতীতে হেডম্যান, কারবারী ও সামাজিক যে প্রথাছিল তার ধীরে ধীরে বিলুপ্তি পথে। পাহড়ী সশস্ত্র সন্ত্রাসী (জেএসএস) অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হস্তক্ষেপে সামাজিক বিচার করার পরিস্থিতি নেয়। জনপ্রতিনিধিরা নিস্ত্র অসহায় অবস্থা হয়ে সন্ত্রাসী বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারে না। তাদেরকে প্রশ্রয় না দিয়ে সকলে মিলে প্রতিবাদ মাধ্যমে রুখে দাঁড়াতে হবে বলে জানান।

প্রধান অতিথি বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবদিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য এলাকা স্বাধীনতা পর থেকে কিছুই ছিলনা, সে পার্বত্য এলাকার এখন উন্নয়নের প্রায় অংশ ভাগ পরিপূর্ণ হয়েছে। তবুও দেশে বিভিন্ন উন্নয়নে তাগিদের শেখ হাসিনা সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে পার্বত্য এলাকার বেসরকারি সমস্ত কলেজকে জাতীয় করন করা হয়েছে। তার মধ্যে বান্দরবানে রুমা ১টি, লামা ১টি, নাইক্ষ্যংছড়ি ১টি এবং আলেকদম ১টি জাতীয় করন করা হয়েছে বলে জানান প্রধান অতিথি। তিনি আরো বলেন নৈরাজকাত বিরাজ করছে পার্বত্য এলাকার। এ পার্বত্য এলাকার অশান্তি থেকে শান্তি পাওয়া লক্ষে দেশ রতœ শেখ হাসিনা সাহসিকতায় ১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বা পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির করেছে। কিন্তু এতা থাকার কথা নয়। তখন সকল শান্তি বাহিনীরা চুক্তি বাস্তবায়ন করেছে। সে যায় গায় এখন জেএসএস পক্ষ নিয়ে নিরীহ মানুষের উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ১৩ জুন বান্দরবান সদর উপজেলা জামছড়ি পাড়া থেকে অপহৃত আ.লীগ নেতা ও সাবে ইউপি মেম্বার মংপু মারমাকে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) অপরহণ করেছে। কদিন যাতে না যাতে আবার রোয়াংছড়ি উপজেলায় তারাছা ইউনিয়নে তালুকদার পাড়াতে জেএসএসে সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল পাড়াবাসীকে বেধরক মারধর,নির্যাতন, প্রাণ নাশের হুমকি, ধামকি চাঁদাবাজির করেছে। শুধু তাই নয় সকল গ্রাম বাসীকে ভিটা বাড়ি ছাড়া করেছে। আনেকে বান্দরবান শহরের আবাসিক হোটেলে ও তাদের আত্মীয়-স্বজনে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন ঘর বাইরে পাড়া বাইরে যেতে সাহস পাচ্ছে না। ভয় ভীতি করলে হবে না সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও রুখে দাঁড়াতে হবে। যত বড় সন্ত্রাস দল হোকনা কেন সকলকে তারিয়ে মোকাবেলা করে পার্বত্য এলাকার থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে বলেন জানান। মতবিনিময় সভা শেষে হেডম্যান, কারবারীদেরকে সম্মানী ভাতা বিতরণ করেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্স পরিদর্শন করেন চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন