লক্ষ্মীছড়ি শত্রুমুক্ত হয় ৬ ডিসেম্বর, উড়ানো হয় লাল-সবুজের পতাকা
লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি : বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আজ থেকে ৪৫ বছর আগে ৯মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে গোটা বাঙ্গালি জাতি অর্জন করেছে সুমহান বিজয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালি জাতি পায় লাল-সবুজের প্রিয় পতাকা-স্বাধীন বাংলাদেশ। ৩০লাখ বাঙ্গালির আত্মত্যাগ এবং প্রায় ২লাখ মা-বোনের সভ্রমের বিনিময়ে এই স্বাধীন বাংলাদেশ।
৬ ডিসেম্বর, খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। কিন্তু কী ঘটেছিল সেই দিন?
অবরুদ্ধ পাকিস্তানী বাহিনী। পরাজয় আসন্ন। ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এই দিনেই। আর ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর এই দিনে লক্ষ্মীছড়িতে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা। শত্রুমুক্ত হয় লক্ষ্মীছড়ি। সংখ্যা হিসেব করলে ৮ থেকে ১০ জন স্থানীয় মানুষ একত্রিত হয়ে বর্তমান লক্ষ্মীছড়ি থানা ছোট (ইপিআর) ফাঁড়ীতে লাল-সবুজের পতাকা উড়ায়।
লক্ষ্মীছড়ির স্থানীয়রা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এমনটা খুব একটা স্পষ্ট করে কেউ বলতে পারে নি। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন অনেকেই। পাঞ্জাবিরা এখানকার একজন উপজাতিকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলেছিল। মেজর পাড়া এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ির কঞ্চননগরসহ পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে আসা যুবকদের নিয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনীর সাথে এখানে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। রাঙ্গুনিয়া দলে ২৩ থেকে ২৫ জন এবং কাঞ্চনপুর থেকে ৮ জনসহ আনুমানিক ৩০ জন মুক্তিবাহিনীর এই দলটির সাথে আধুনিক অস্ত্র সস্ত্রে সুসজ্জিত পাকবাহিনীর অবিরাম গুলিবর্ষনের ফলে কয়েক মিনিটের মাথায় মুক্তিবাহিনীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
দিনটি ছিল জুন মাসের কোনো একটি তারিখ। এ সময় রাঙ্গুনিয়ার কবির আহমেদ নামে এক মুক্তিযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হলে এক দিন পর মহিষকাটার ভোলাছোলা একটি উপজাতীয় জুম ঘর থেকে তাকে উদ্ধার করে কাঞ্চনপুর একটি ওষধের দোকানে ডা. আব্দুল কুদ্দুসের চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।তিনি অবশ্য এখন আর বেঁচে নেই। পরে মুক্তিবাহিনীর এই দলটি খীরাম এলাকায় ক্যাম্প করে।