‘লাভের চিন্তায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা যাবে না’

fec-image

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, লাভের চিন্তায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা যাবে না, এটি হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন। যারা এখানে পড়াশোনা করবে তারা নির্দিষ্ট ফি দিয়ে পড়াশোনা করবে। কী পরিমান ফি দিয়েছে, সেটা কোথায় কোথায় খরচ হয়েছে, সেই ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং এখানে যারা ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা আছেন আপনারা সুন্দরভাবে পরিচালনা করবেন। নয়তো ইউনিভার্সিটি বন্ধ করে দিতে হবে!

বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সংবর্ধনা সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে অতীতে যারা অর্থ আত্মসাৎ করেছে, দুর্নীতি করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। শাস্তি ভোগ করতে হবে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে সরকারি তরফে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, “আমরা যতটুকু জানি-এই প্রতিষ্ঠানের অনেক সমস্যা ছিল। এই সমস্যাগুলো উত্তরণ করে একটা পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করাটা আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের চাওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক দিন হয়েছে। কিন্তু আমি বলব, এখানে যারা পরিচালনা করছে তাদের দুর্বলতার কারণে বা তাদের নানা রকম দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবে আগাতে পারে নাই। এই পর্যটন শহরে একটাই বিশ্ববিদ্যালয় এবং এখানে যারা শিক্ষক আছেন, পড়াশোনা করাচ্ছেন, তাদের প্রতি আমার একটা নিবেদন থাকবে- এই পরিসরে যেভাবে করে পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে সেক্ষেত্রে এইটা কোন স্থায়ী সমাধান না এবং পাশাপাশি লোকেশন এরিয়া নিয়েও সমস্যা আছে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, সে সুপারিশগুলো আমাদের মেনে চলতে হবে এবং সেগুলো মেনে চলেই আমাদের এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত করতে হবে। আর যদি এগুলো মানা না হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা করা যাবেনা।

আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ হচ্ছে- যে সমস্ত নির্দেশ সরকারের পক্ষ থেকে আসবে তা পরিচালনাকারীরা যদি মানতে না পারে তাহলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে, এটা সরকারের নির্দেশ।

উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হোক চাই না। কিন্তু প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে দুর্বল হলে আমরা শক্ত ব্যবস্থা নেব।

আপনারা জানেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি তে যারা অর্থ আত্মসাৎ করেছে তাদের কারাগারে যেতে হয়েছে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ও যারা অর্থ সরিয়েছে এবং অর্থ আত্মসাৎ করেছে তাদের কারাগারে যেতে হবে।

পরিচালকদের সতর্ক করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কিন্তু শিক্ষার্থীদের অর্থ। শিক্ষার্থীদের অর্থেই যেহেতু শিক্ষা পরিচালিত হয়, এটা ট্রাস্ট হিসেবে ট্রাস্টি বোর্ড পরিচালনা করবে। সুতরাং এখানে বিনিয়োগ আর রিটার্ন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান চলবে না।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জননেতা সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি।

তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া কক্সবাজারবাসীর জন্য একটি উপহার। শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা কক্সবাজারের সন্তানদের মানসম্মত উচ্চ শিক্ষার পথ সুগম করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বোর্ড অব ট্রাস্টিজ অত্যন্ত আন্তরিক ও এ লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সেক্রেটারি প্রফেসর এ কে এম গিয়াসউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও সাবেক সাংসদ অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন, জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়েশা সিরাজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, বিশ্ববিদ্যালয়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন