সন্তু লারমার বান্দরবান সফর: পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে আহত ২০, শহরে সেনা-বিজিবি মোতায়েন

DSC02266 copyস্টাফ রিপোর্টার:

জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি ও পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ওরফে (সন্তু লারমা) সফরকে কেন্দ্র করে বান্দরবানে পাহাড়ী-বাঙালী সংঘর্ষ হয়েছে। সফর নিয়ে শহরের বালাঘাটায় জেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ও জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠনের বাঙালী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১জনকে আটক করেছে পুলিশ।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।

বুধবার বান্দরবানের বালাঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।দুপুর ১২টার পর টানটান উত্তেজনায় ব্যাপক নিরাপত্তায় বান্দরবান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সম্মেলনে যোগ দিতে চার দিনের বান্দরবান সফরে আসে সন্তু লারমা।

পুলিশ ও স্থানিয়রা জানায়, বুধবার দুপুর ১২টার পরে পুলিশ নিরাপত্তায় সন্তু লারমা বান্দরবান শহরে প্রবেশ করে স্থানীয় সার্কিট হউজে অবস্থান করে। বহরের পিছিয়ে পড়া একটি চাঁদের গাড়িকে বাঁধা দেয় জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় জেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ও জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠনের হরতাল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়।

আহতরা হলেন, রিপন তঞ্চঙ্গা (১৮), বামং মার্মা(২১), উথেয়নু মার্মা,(১৯), পরিমল চাকমা(১৮), জয়নাল (১৯), সামশুল ইসলাম (২৫), পুচাথোয় (৩৮), উচথোয় (৩৮), সুনিল চাকমা (৫০) হ্লাচিং মার্মা (২১) আবিদুর রহমান (৪৫)। গুরুত্তর আহত রকি তঞ্চঙ্গা(১৮) পায়অংপ্রু মার্মা(৪০) ও মংথোয় মার্মা (৫০) কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে।
BandarBan pic-2,11.3
এদিকে সন্তু লারমার আগমন ঠেকাতে সকালে বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকেই অবস্থান নেন জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় সংগঠনের নেতাকর্মীরা সড়কের স্বর্ণমন্দির এলাকায় বেইলি ব্রিজের পাতাটন খুলে ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে স্কুল-কলেজ ছাত্রছাত্রীরা।

সেনাবাহিনী ও পুলিশ বেইলি ব্রিজ মেরামত এবং সড়কের ব্যারিকেড তুলে ব্যাপক নিরাপত্তায় সন্তু লারমাকে সড়কপথে জেলা শহরের সার্কিট হাউজে পৌঁছে দেন। এছাড়া বালাঘাটা, কালাঘাটা বড়ুয়াটেক ও মেম্বারপাড়ায় পুলিশ কয়েক দফায় লাঠিচার্জ করে বাঙালীদের ধাওয়া করে।

এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরে দুই প্লাটুন বিজিবি, সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী-বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে জাগো পার্বত্যবাসী নামের সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চে অবস্থান নিয়ে মিছিল সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমার বান্দরবান সফর ঠেকাতে এবং পাহাড়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুনের প্রতিবাদে জাগো পার্বত্যবাসী নামের একটি সংগঠন ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচির ডাক দেয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন