‘সরকার ও রাষ্ট্রকে আইএলও সনদে স্বাক্ষরে বাধ্য করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’

1370766735

পার্বত্য নিউজ ডেস্ক:

“আদিবাসীদের অধিকার আদায়ে অন্য কোনো আইনের দরকার নেই। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত হলেই আদিবাসীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবেন।” বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব লাউঞ্জে ‘বাংলাদেশ আদিবাসী অধিকার আইন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। আদিবাসী অধিকার সংসদীয় ককাস ও অক্সফাম এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

উত্থাপিত আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, “সংজ্ঞা যদি অস্পষ্ট থাকে, তাহলে কোনো সরকার আপনাদের এ সব আইনে স্বীকৃতি দেবে না। আপনারা এখানে যেসব আইন উত্থাপন করেছেন, তার বেশির ভাগই সংসদ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।” অধিকার আদায়ে সব আদিবাসীকে সুসংগঠিত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

আদিবাসীদের নিয়ে যে সংগঠনগুলো কাজ করে, সেই সব সংগঠনের প্রধানদের উদ্দেশে জাতীয় মানবাধিকার চেয়ারম্যান বলেন, “পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও আদিবাসীদের অধিকার আদায়ে যদি আইএলও-১৬৯ সনদে অনুসমর্থন ও স্বাক্ষর করা যায়, তাহলে কোনোভাবেই আদিবাসীদের অধিকার খর্ব হবে না।”

এ জন্য তিনি সরকার ও রাষ্ট্রকে আইএলও সনদে স্বাক্ষরে বাধ্য করতে তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রে দুটি ধারা রয়েছে উল্লেখ করে ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘দেশে দুটি পথ রয়েছে। একটি পথ দেশকে ভালো পথে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যটি অন্ধকারে। বাঙালি, আদিবাসী সবাইকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কোন দিকে যাবেন!’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় আইন কমিশন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাহ আলম বলেন, “সারা বিশ্বে আদিবাসীদের অধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় হয়েছে।” সংবিধানে ‘আধিবাসী’ না লিখে কেন ‘ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী’ লেখা হয়েছে, তা আপনাদের জানতে হবে।” তিনি উত্থাপিত আইনের সংশোধনের জন্য অনুরোধ জানান।

সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, “আদিবাসী বান্ধব সরকার ক্ষমতায় এসে আদিবাসীর সংজ্ঞা পাল্টাতে চেয়েছে। এর জবাব মানুষ দিয়েছে।”  আদিবাসী আইন করার জন্য আমাদের এত বছর অপেক্ষা করতে হলো, বাস্তবায়নে আরও কত বছর নাকি অপেক্ষা করতে হয়! আদিবাসীদের দুর্বলতাকে পুঁজি করে তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়। রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, “পার্বত্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার এত বছর পরেও তার বাস্তবায়ন আমরা দেখছি না। আদিবাসীদের সুরক্ষায় একটি শক্তিশালী আইন থাকা দরকার, যা অন্য দেশে রয়েছে।” তিনি বলেন, “সংসদে এ সব আইন নিয়ে আলোচনা করা হবে।”

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এটিএন-বাংলার উপদেষ্টা (প্রোগ্রাম) নওয়াজেশ আলী খান, আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস সম্বন্বয়কারী প্রফেসর মেজবাহ কামাল, সদস্য গৌতম কুমার চাকমা প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন