স্ত্রী মুন্নিকে ফিরে পেতে রিক্সা চালক স্বামী জাকের হোসেনের আর্তনাদ

riksha calak jaker and munni pic pekua
পেকুয়া প্রতিনিধি :
মো. জাকের হোসেন। পেশায় রিক্সা চালক। ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন মুন্নি নামের এক মেয়েকে। বিয়ের পর থেকে স্বামী স্ত্রী দুজনই খুব সুখেই সংসার করছিলেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের রবিউল হোসেন ফাহিম নামের ৪ বছর বয়সী এক শিশুপুত্রও রয়েছে।

জাকের হোসেনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার দুর্গাপুর গ্রামে। ভাল আয় রোজগারের আশায় দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজার এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে থাকেন। এই সুবাদে তার সাথে পরিচয় হয় চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের দক্ষিণ-পশ্চিম পহরচাঁদা গ্রামের মৃত কবির আহমদের মেয়ে রেহান জান্নাত মুন্নির সাথে। এরপর তাদের মধ্যে পরিচয়ের সূত্র ধরে দুজনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে।

তারা প্রেমের সম্পর্ককে বাস্তবে রূপ দিতে গত ২০০৯ সালে দেড়লাখ টাকা কাবিন ধার্য্য করে ইসলামী শরিয়াত মোতাবেক বিয়ে করেন। চট্টগ্রামের দেয়ানবাজারে ভাড়া বাসা স্বামী-স্ত্রী বসবাস শুরু করেন। সারাদিন রিক্সা চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনমতে সংসার চালান জাকের হোসেন।

এদিকে গত ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম থেকে জাকের হোসেনের স্ত্রী মুন্নি পালিয়ে হারবাং বাপের বাড়ীতে চলে আসেন। এরপর স্ত্রীকে ফিরে পেতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন, পরে জাকের হোসেন স্ত্রীকে ফিরে পেতে দারস্থ হন হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মো. বাবরের কাছে। ইউপি চেয়ারম্যানের হস্থক্ষেপে স্ত্রী মুন্নিকে ১৬দিন পর বহু দেন দরবারের বিনিময়ে ফিরে পান। আবারো সুখের আশায় স্ত্রীকে নিয়ে যান চট্টগ্রামের ভাড়া বাসায়। সুখের আশায় আবারো সংসার শুরু করে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে।

অপরদিকে গত ৩০ এপ্রিল চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজার বাসা থেকে সকালে রিক্সা নিয়ে বের হন জাকের হোসেন। রাতে ফিরে এসে বাসায় দেখেন স্ত্রী ও শিশুপুত্র ফাহিম নেই। আশেপাশের বাসা-বাড়ীর লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন রাত ৮টার দিকে তার স্ত্রী মুন্নি শিশুপুত্র ফাহিমকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরে জাকের হোসেন বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নিয়ে জানতে পারেন তার স্ত্রী মুন্নিসহ শিশু পুত্র ফাহিম চকরিয়ার হারবাং ষ্টেশনের উত্তর পার্শ্বে মাখারি পাহাড়ে তার ভাই পান বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ীতে অবস্থান করছেন। গত এক মাস ধরে স্ত্রী ও সন্তানকে ফিরে পেতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন জাকের হোসেন। এ প্রতিবেদকের সাথে গতকাল সাক্ষাত ঘটে রিক্সা চালক জাকের হোসেনের। সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় পেয়েই নিজের স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার করুন কাহিনী বর্ণনা করলেন অসহায় রিক্সা চালক জাকের হোসেন।

জাকের হোসেন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘তিনি সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে রিক্সা চালিয়ে যা আয় করেন তা শুধু নিজের স্ত্রী ও সন্তানের সুখের জন্য ব্যয় করেছিলেন। এপরেও সুখের সংসার ছেড়ে তাকে কষ্ট দিয়ে নির্দয়ভাবে স্ত্রী মুন্নি তার বাপের বাড়ীতে চলে গেলো।’ আমার মনো যাতনা আপনাকে কি করে বুঝাব তার আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আমার স্ত্রী ও অবুজ সন্তান ফাহিমকে ফিরে পেতে আমি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিধিদের হস্থক্ষেপ কামনা করছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন