কাচালং নদী ভাঙনে দুই সড়ক বিলীন : ঝুঁকিতে সাত গ্রাম

Baghaichari,,pic,,2,,07,,14.jpg

মোঃ আল আমিন, বাঘাইছড়ি থেকে ফিরেঃ
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা ইউনিয়নের কাচালং নদীর দক্ষিণ পাড়ে বাড়িবিন্দুঘাট এলাকার ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙনে দুই সড়ক ও তিন শতাধিক ফলজ গাছ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কাচালং নদীর গতিপথ পরিবর্তনের আশঙ্কায় তুলাবানসহ সাত গ্রামের মানুষ চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল কাচালং নদী বেড়ে যায়। গত ২৭ জনু থেকে কাচালং নদীর পানি কমে যায়। পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িবিন্দুঘাট এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এতে ২৯ ও ৩০ জুন (রোববার ও সোমবার) কাচালং নদী ভাঙনে বাড়িবিন্দুঘাট-কদমতলী ও বাড়িবিন্দুঘাট-উন্নয়ন বোর্ড সড়ক নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া ওই এলাকায় তিন শতাধিক সুপারি, নারিকেল, আম ও কাঁঠাল গাছ নদীর গর্ভে চলে গেছে। এছাড়া ভাঙন অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধ করা না হলে বাড়িবিন্দুঘাট এলাকা বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙন বড় আকার দেখা দিলে কাচালং নদীর গতিপথ পরিবর্তন হবে। এতে তুলাবান, মুসলিম ব্লক, মহাজনপড়া, গুচ্ছগ্রাম, মধ্যম পাড়া, কলেজ পাড়া হাজীপাড়া ও মাস্টারপাড়া গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শত শত বাড়িঘর ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন গ্রামের লোকজন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়িবিন্দুঘাট এলাকায় ইতিমধ্যে দুইটি সড়ক কাচালং নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। গত বিশ দিন ধরে ওই দুই সড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্য কোথাও যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করছেন। বাড়িবিন্দুঘাট এলাকায় লিটন চাকমা বলেন, কাচালং নদী যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে আমার মনে হয় যে কোনো সময় আমাদের বাড়িঘর ভেসে যাবে। উপরে বৃষ্টি হলে কাচালং নদীতে পানি বেড়ে যায়, এতে ভয়ে ঘুম হয় না। ভাঙনে মূখে ৬০ থেকে ৭০ পরিবার মানুষ উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতে হয়।

তুলাবান গ্রামের প্রধান (কার্বারী) আলোক বিকাশ খীসা বলেন, ভাঙন রোধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু কেউ উদ্যোগ নেয়নি এপর্যন্ত। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে কাচালং নদীর গতিপথ তুলাবান গ্রাম দিয়ে চলে যাবে। এতে শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা প্রাথমিকভাবে তালিকা করেছি এতে ৬০ পরিবারের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া কমপক্ষে ছয় থেকে সাতটি গ্রাম তলিয়ে যাবে বলে তিনি জানান। মারিশ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তন্টু মনি চাকমা বলেন, ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দুইদিনে দুটি সড়ক ও ব্যাপক ফলজ গাছ নদীর গর্ভে চলে গেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। আপাতত চলাচল করা জন্য ভেঙে যাওয়া সড়কের পাশে ইউনিয়নে পরিষদ থেকে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বড়ঋষি বলেন, বাড়িবিন্দুঘাট এলাকার লোকজন আমাকে বলেছেন। কিন্তু আমাদের সীমিত বরাদ্দে ওই ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধের ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিকভাবে জানানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন