নির্মলেন্দু চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদে সনাতন সম্প্রদায়ের সিরিজ কর্মসূচী
নিজস্ব প্রতিবেদক :
খাগড়াছড়িতে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা নির্মলেন্দু চৌধুরীর উপর হামলাঠ প্রতিবাদে সনাতন সম্প্রদায় সিরিজ কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে জেলা ও উপজেলার সকল ধর্মীয় মন্দিরে প্রতিবাদী ব্যানার উত্তোলন, জেলা ও উপজেলা সদরে মানববন্ধন ও সনাতন সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি শহরের সমাজ কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সনাতন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার ভট্টচার্য জানান, সন্ধ্যা ৭টায় কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এডভোকেট বিধান কানুনগোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল কান্তি দাশ ও সহ-সভাপতি সত্যজিত চৌধুরী, বাংলাদেশ জম্মাষ্টমী উদযাপন কমিটির আহবায়ক তপন কান্তি দে, সম্পাদক চন্দ্র শেখর দাশ, প্রফেসর দীলিপ চৌধুরী ও আশীষ কুমার ভট্টাচার্যসহ সনাতন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় শুক্রবার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সংবাদপত্রে বিবৃতি প্রদান, শনিবার জেলা ও সকল উপজেলার মন্দিরে সনাতন সম্প্রদায়ের জান-মালের নিরাপত্তার দাবিতে প্রতিবাদী ব্যানার উত্তোলন, রবিবার জেলা সদর ও সকল উপজেলায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত,বৃহষ্পতিবার বেলা ১২টার দিকে নারিকেল বাগান এলাকায় খাগগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য নির্মলেন্দু চৌধুরীর উপর হামলার ঘটনা ঘটে। নির্মলেন্দু চৌধুরীকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নয়ন ময় ত্রিপুরা পার্বত্যনিউজকে জানান, নির্মলেন্দু চৌধুরী নাক দিয়ে রক্ত যাচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নত রয়েছে। কথা বলতে পারছে না। অবস্থা নাজুক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে হামলার প্রতিবাদে শহরে লাঠি মিছিল বের জেলা আওয়ামীলীগ। মিছিলটি শাপলা চত্বরে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। নেতাকর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে আওয়ামী লীগের অপর অংশের কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় কয়েকটি দোকানে হামলা ও কয়েকটি টমটম ভাংচুর হয়। এ সময় আতংকে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট ও যানবাহন সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়।
উদ্ভূত পরিস্থিস্থিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের ডাকা বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বৈঠক আহবান করলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও তার অনুসারীরা সে বৈঠক বর্জন করেন।
উল্লেখ্য, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর পর থেকে প্রতিনিয়ত খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের অনুসারীদের পাল্টা-পাল্টি হামলা, মামলা ও ভাংচুরে লিপ্ত রয়েছে।